লোকটা ফস্ফস্ করে বিড়ি ফুঁকছিল। আমাকে দেখে মুখের বিড়িটা ফেলে দিয়ে বলল, “বাবু, ভালো আছেন?” চল্লিশ- বিয়াল্লিশ বয়স, ভাঙাচোরা এলোমেলো চেহারা, মুখে রুখো দাড়ি। রাস্তার পাশের বাড়িতে রাজমিস্ত্রীর যোগাড়ের কাজ করছে। আমার স্মৃতিশক্তি চিরকালই কমজোরি। হাঁ করে তাকিয়ে থাকা দেখেই লোকটি আবার বলে, “বাবু, আমি হাসান। টিনভাঙা, লোহাভাঙা, প্লাস্টিক …
Read More »আত্মারামের বাসর যাপন – রঘুনাথ মণ্ডল
আত্মারামের বিয়ে, কনে বিল্ববাসিনী। আগে আত্মারাম কনে দেখেনি। বাবা, মামা সম্বন্ধ করে ঠিক করেছেন। পাত্রী দেখে এসে বাবা বলেছিলেন, “আহাও নয়, ছিছিও নয়, চলনসই!” বরাসনে বসে থেকে আত্মারামের ঘুম পেয়ে গেল, কোমর কটমট। এক কাপ কড়া লিকার চা হলে বেশ হতো! বোশেখের শেষ রাতে লগ্ন। এখন খানা-পিনায় সব …
Read More »লোনাজলের আঁকিবুঁকি – রঘুনাথ মণ্ডল
শেষ হেমন্তের পড়ন্ত বেলা। চারিদিকে ছড়ানো পলকা হলদে রোদ – আছে কিন্তু থাকবে না গোছের। ওরা দুজনে বসেছিল পাড়ার চণ্ডীমণ্ডপের বাঁধানো চাতালে- সোশ্যাল ডিসট্যান্স মেনেই। অনঙ্গদা ও টগরপিসি। দু-একজন পাশ দিয়ে যেতে যেতে স্বভাব-ধর্মে বাঁকা চোখে তাকাচ্ছিল কিন্তু তেমন কিছু মনে করছিল না। আজ থেকে কুড়ি বছর আগে ওরা …
Read More »পুরুষ গরু – রঘুনাথ মণ্ডল
সুবিমলবাবুর কর্মসূত্রে শহরে বাস। গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক দুর্গাপুজো, তাই প্রতিবছর পুজোর সময় গ্রামের বাড়ি যান। এবারেও গেছিলেন। ফিরেছেন ত্রয়োদশীর দিন। শহরে যে পাড়ায় তিনি বাস করেন সেখানে একটি ক্লাব আছে। একটি দুর্গামন্দির আছে, ক্লাবের ছেলেরা দুর্গাপুজো করে। প্রশান্তবাবু ক্লাবের বরিষ্ঠ কর্মকর্তা, সুবিমলবাবুর সাথে সম্পর্ক ভালো। সুবিমলবাবু ক্লাবের পুজোয় যথাসাধ্য চাঁদা …
Read More »চানাচুরের স্বাদ- রঘুনাথ মণ্ডল
অনেক দিন পর শীলার সঙ্গে দেখা, তা প্রায় পঞ্চাশ বছর। হাইস্কুলে আমরা একসঙ্গে পড়তাম। ও ছিল অঙ্কে কাঁচা কিংবা অঙ্ক কষার ঝামেলায় যেতে চাইত না। আমার খাতা থেকে বেমালুম টুকে স্যারকে দেখাতো, আর মাখন সাহার দোকান থেকে চানাচুর কিনে এনে খাওয়াতো। আঃ! কী স্বাদ! এখনও যেন লেগে আছে …
Read More »তপতীর পতিলাভ- রঘুনাথ মণ্ডল
অরিন্দমবাবুর মেয়ে তপতী ছোট থেকেই শিবঠাকুরের ভক্ত। কলেজে পড়ার সময় রথের মেলা থেকে কিনে এনেছে শিব ঠাকুরের মূর্তি। রোজ দুবেলা ঠাকুরকে ধূপ- সন্ধে দেখায়। খুব ভক্তি করে শিবরাত্রি ব্রত পালন করে। সারা দিন উপবাসী থেকে শিব ঠাকুরের মাথায় জল ঢালতে ঢালতে নিশ্চয়ই তপতী বলে, “ঠাকুর! আমাকে একটা মনের মত বর …
Read More »নেট প্র্যাকটিস- রঘুনাথ মণ্ডল
মানুষের মতোই প্রত্যেকটা শহরের একটা নিজস্ব মেজাজ থাকে। অল্প কিছুদিন হল জেলার এই সদর শহরে বদলি হয়ে এসেছি। এখনও শহরটার সঙ্গে বিস্তর আলাপচারিতা বাকি। অভ্যাসমতো ভোরবেলায় হাঁটতে বেরিয়েছি। খাতায় কলমে শীতকাল আসেনি তখনো। কিন্তু ভোরের বাতাসে একটা শিরশিরানি ভাব। হাঁটতে হাঁটতে একটা বড় বাড়ি, চারিদিক পাঁচিল ঘেরা। ভিতরের গাছপালার ডগাগুলো …
Read More »