-এই মুড়িটা খেয়ে দেখুন জবুদা, পিসীমা বললেন, -আমি একটু চা করে নিয়ে আসছি। বলে বারান্দায় বসে থাকা জবুদা’র হাতে মুড়ির একটা বাটি ধরিয়ে দিয়ে ভিতরে চলে গেলেন পিসীমা। আর সেই গমনপথের দিকে দেখতে দেখতে কেমন সংকুচিত হয়ে উঠছিলেন জবুদা। খানিকক্ষণ সেদিকে তাকিয়ে থেকে চোখ সরিয়ে নিলেন মুড়ির বাটিতে। বেশ …
Read More »চাতকেরা- নির্মাল্য ঘরামী
জিভ দিয়ে ঠোঁটটা একবার চেটে নিল শাক্য। গরমও পড়েছে যথেষ্ট। কিন্তু তেষ্টা আর গরম কী শুধু এইরকমই হয়? বৃষ্টি নামবে কবে? বৃষ্টি! বৃষ্টি! কী মিষ্টি এই নামটা! ওর দুষ্টু হাসির সঙ্গে একটু আদিম রসিকতা মাখানো নিষ্পাপ ধরনের কথাবার্তা, বঙ্কিম গ্রীবার চাহনি ওকে যে কী পরিমাণে আকর্ষণীয়া, আবেদনময়ী …
Read More »জমানা- নির্মাল্য ঘরামী
বুধু অবাক হয়ে ছেলে তিনটির দিকে তাকিয়ে ছিল। তখন বিকেল শেষ হয়ে সন্ধ্যা শুরু হবে প্রায়। মাঠের ধারে ঝাঁকড়া কৃষ্ণচূড়া গাছটির নিচে কিছুটা ছায়া মতন। এখন সন্ধ্যা নামায় সেখানে ছায়া ক্রমশ প্রকট হচ্ছে। এদিক সেদিক হেঁটে হেঁটে ক্লান্ত হয়ে সেখানে গিয়ে ঘাসে বসে পড়ল বুধু। আর তখনই নজরে এল …
Read More »অজৈব- নির্মাল্য ঘরামী
ওরা ওকে আড়াল-আবডাল থেকে নজরে রেখেছিল। পূর্ণিমা রাত হওয়ার কোন অসুবিধে হল না। এবারে আর চাটনিকে কেউ ছাড়ল না। ও যে ডাইন, তার নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়া গেছে। মঙ্গল–একেশ্বরও কিছু বলতে বা করতে পারল না। ওদের কথা শুনবেটা কে? সবাই তখন নিজের নিজের স্বাস্থ্য-সম্পদের রক্ষা করতে মরীয়া! চাটনি যে সিংরাই …
Read More »জাগরণ – নির্মাল্য ঘরামী
তখনও ছটফট করছিল ছাগলটার শরীরটা। চারখানি পা তার এলোমেলো নড়ছিল। যদিও দেহ থেকে মাথাটা বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল, তাও শরীরের স্পন্দন তার থামেনি। পেটটা থেকে থেকেই ওঠা নামা করছিল। কাটা গলাটা থেকে তখনও তাজা রক্ত বেরোচ্ছিল। অনেকটা তাজা রক্ত বেরিয়ে ভিজিয়ে দিয়েছিল সামনের ঘাস। ক্রমশ রক্ত ছড়িয়ে পড়ছিল আরও দূরে। …
Read More »শূন্য – নির্মাল্য ঘরামী
এই সিন্দুক খোলা যায় না, শুধু একদিন ছাড়া। সুন্দরবাবু আজ ধীরে ধীরে তাঁর সিন্দুকটি খুলে ফেললেন। তারপরে তাঁর জমানো সম্পত্তির হিসেব নিকেশ করতে বসলেন। অনেক কিছুই জমেছে এত গুলো বছরে। প্রথমেই একটা বড় শূন্য হাতে তুলে নিলেন। তারপরে আরো একটা। অনেক শূন্য আছে ভাঁড়ারে, এর যোগফল নিতান্ত …
Read More »হিমেল কুয়াশা তখন- নির্মাল্য ঘরামী
-আচ্ছা, এই নদীটার নাম কী? নুড়ি পাথর দিয়ে প্রায় সম্পূর্ণ পরিবৃত একটা ছোট্ট নদী দেখিয়ে জানতে চাইল মাধবী। এই গরমে তির–তির করে সামান্য জল বয়ে যাচ্ছে সেটাতে। সামনের পাহাড় দু’টির মধ্যে দিয়ে বেরিয়ে এসে সেটা ক্রমশ চওড়া হয়ে গেছে ভাটির দিকে। নদীটির দুই তীর পলাশ, কুসুম, মহুল, …
Read More »এখন কাজের সময়- নির্মাল্য ঘরামী
সুশীলা ওকে অনুরোধটা না করলে, হয়তো কাজটা হাতেই নিত না ভুবন। ফেসবুকে যোগাযোগ আছে ওরে সঙ্গে, যদিও তা অনিয়মিত। বাল্যের সেই টানটা হয়তো নেই, কিন্তু একটা চার্ম কি থেকে যায় না? আর এমনিতে মেয়েটা ওর থেকে কোনদিন কোন সাহায্য চায় নি। ফলে বাস্তববুদ্ধি সম্পন্ন মধ্য যৌবনে পৌঁছে গিয়েও ওকে না …
Read More »ফাঁদ- নির্মাল্য ঘরামী
ক্লান্ত এক সন্ধ্যায় একাকী ফাঁদের পাশে বসে লোকটা আজ ভেবে দেখল যে সে অনেকদিন ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছে পাখিটিকে ধরার। নয় নয় করেও কয়েক হাজার বছর হয়ে গেল। এটাকে ধরতে পারলেই আর কোন চিন্তা নেই। সমস্যা এটা যে এই পাখিটাকে ধরতে গেলেই এর সঙ্গী অন্য পাখিটা চলে আসছে। সঙ্গীটি মারাত্মক। …
Read More »ছেঁড়া পুতুল- নির্মাল্য ঘরামী
বাচ্চা মেয়েটি পুতুলটিকে কুড়িয়ে পেয়েছিল একটা ঝোপের মধ্যে- ঘোড়ানিম ও পলাশের ঝোপের আড়ালে।। মাঝে মাঝে দুপুরে ও বেড়িয়ে পড়ত। এদিক-সেদিক ঘুরে ফিরে আসত বাসায়। তবে দিন দু’য়েক হল ওর মাসি যমুনা একটা দোকানে যায় কাজে। সেই সুযোগে সে আরেকটু দূরে চলে গিয়েছিল। আনমনে খেলতে খেলতে বুনো ঝোপের মধ্যে পুতুলটিকে পেয়েছিল। …
Read More »