সুবিমলবাবুর কর্মসূত্রে শহরে বাস। গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক দুর্গাপুজো, তাই প্রতিবছর পুজোর সময় গ্রামের বাড়ি যান। এবারেও গেছিলেন। ফিরেছেন ত্রয়োদশীর দিন। শহরে যে পাড়ায় তিনি বাস করেন সেখানে একটি ক্লাব আছে। একটি দুর্গামন্দির আছে, ক্লাবের ছেলেরা দুর্গাপুজো করে। প্রশান্তবাবু ক্লাবের বরিষ্ঠ কর্মকর্তা, সুবিমলবাবুর সাথে সম্পর্ক ভালো। সুবিমলবাবু ক্লাবের পুজোয় যথাসাধ্য চাঁদা দেন।
গ্রামের বাড়ি থেকে ফিরে পাড়ায় বেরিয়েছেন। দেখেন ক্লাবের দুর্গামন্দিরের সিঁড়িতে প্রশান্তবাবু ও কয়েকটি ছেলে বসে আছে। এক মাঝবয়সী ভদ্রলোক দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তাদের কীসব বলছেন। মনে হল তাঁর পারিবারিক কথা।
সুবিমলবাবু হাত জোড় করে সকলকে নমস্কার করলেন ও শুভ বিজয়া জানালেন, দাঁড়িয়ে থাকা ভদ্রলোককেও। ওঁরা সবাই প্রতি নমস্কার করলেন ও কুশলাদি জিজ্ঞেস করলেন কিন্তু ওই দাঁড়িয়ে থাকা ভদ্রলোক নির্বিকার, আপন কথায় মত্ত।
সুবিমলবাবু বাড়ি ফিরছেন। রাস্তার পাশে একটা ফাঁকা জায়গা, সেখানে ঘাস-আগাছার জঙ্গল, একটি মহিলা গরু সেখানে ঘাস-পাতা চিবোচ্ছে। সুবিমলবাবু গরুটার দিকে তাকিয়ে বললেন, – “নমস্কার ম্যাডাম, শুভ বিজয়া”। গরু নিরুত্তর, ঘাস চিবোতে ব্যস্ত।
সুবিমলবাবুর মনে হল, দুর্গামন্দিরে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটিও এমনটাই নির্বিকার ছিল। তাহলে কি ওটা পুরুষ গরু!