দিগ্বিজয় সাধুখাঁ প্রচণ্ড সংকটে পড়েছে। একেবারে ধর্মসংকট যাকে বলে। হাতে স্মার্টফোন আসা ইস্তক বেশ আনন্দে, খুশিতে, শ্লাঘায়, উত্তেজনায় দিন কাটছিল। জীবনের প্রতিটি ঘটন ও অঘটন ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করে যে আত্মপ্রসাদ ও তৃপ্তি লাভ করে এসেছে দিগ্বিজয় , অমৃত তার কাছে কোথায় লাগে ! ছেলের জন্মদিনের আশীর্বাদ চাওয়া, মেয়ের নতুন ইশকুলে যাওয়া, বউয়ের বিবাহবার্ষিকীর গয়না, শ্বশুরের শ্রাদ্ধ, শাশুড়ির টবের নয়নতারা, ভাগ্নের নতুন জুতো থেকে শুরু করে মাছ ভাজতে গিয়ে বউয়ের হাতের ফোস্কা, নতুন ঝুলঝাড়ন, নতুন বাইক মায় বাইক থেকে পড়ে গিয়ে ছেঁচড়ে-যাওয়া কনুইয়ের ছবি পর্যন্ত সে প্রায় প্রতিদিনই গভীর অভিনিবেশ ও আন্তরিক একাগ্রতায় ফেসবুকে সাজিয়ে দিয়েছে।
বন্ধুদের লাইক-কমেন্টে যে স্বর্গীয় সুখানুভূতি লাভ করা যায়, তার তুলনা আর কোথায় মিলবে ?
কিন্তু সুখে থাকতে ব্যাকটেরিয়ায় কিলোয়। গত দু’তিন দিন ধরে দিগ্বিজয় বেজায় ফ্যাসাদে ফেঁসেছে। বলা নেই কওয়া নেই , কার কুদৃষ্টিতে কে জানে, দিগ্বির এক বিশ্রী উপসর্গ গজিয়েছে। উপসর্গ না বলে অনুসর্গ বলা ভাল। কারণ ব্যাপারটা পেছনে যুক্ত। যদিও জিনিসটা মোটেই ভাল নয়। দু’দণ্ড এক জায়গায় স্থির হয়ে বসতে পর্যন্ত দিচ্ছে না তার পশ্চাৎদেশের সেই মোক্ষম স্থানে হওয়া বিস্ফোটকটি !
টনটনে ব্যথা ছাপিয়ে দিগ্বিজয়ের মনে দশ গুণ বেশি বেদনা ও হতাশার বিধুরতায় ছেয়ে রয়েছে একমাত্র আফসোস, ফোড়াটা বেছে বেছে এমন জায়গায় হল, স্ট্যাটাসে তার ছবিসহ সংক্ষিপ্ত বিবরণটুকুও দেওয়া যাচ্ছে না !
তুখোড় স্ট্যাটাসবাজ দিগ্বিজয় আপডেটবিহীন এই পানসে দিনগুলি কাটাবে কী করে ?
……০……