মানুষের মতোই প্রত্যেকটা শহরের একটা নিজস্ব মেজাজ থাকে। অল্প কিছুদিন হল জেলার এই সদর শহরে বদলি হয়ে এসেছি। এখনও শহরটার সঙ্গে বিস্তর আলাপচারিতা বাকি।
অভ্যাসমতো ভোরবেলায় হাঁটতে বেরিয়েছি। খাতায় কলমে শীতকাল আসেনি তখনো। কিন্তু ভোরের বাতাসে একটা শিরশিরানি ভাব। হাঁটতে হাঁটতে একটা বড় বাড়ি, চারিদিক পাঁচিল ঘেরা। ভিতরের গাছপালার ডগাগুলো দেখা যায় বাইরে থেকে। তালা বন্ধ বিশাল গেট থেকে শুরু হয়েছে একটা লম্বা লাইন। লাইনে সবাই অল্পবয়সী মহিলা। ভাবলাম মেয়েদের কোন স্বাস্থ্য শিবির টিবির হবে হয়তো। কৌতূহলী হয়ে একটি মেয়েকে জিজ্ঞাসা করলাম- “মা মণি, তোমরা কী জন্য এই ভোরবেলায় লাইন দিয়েছো?”
মেয়েটি উত্তর দিলো- “কাকু, দেখছেন তো, আমরা সবাই সন্তান-সম্ভবা। আর সামনের এই বাড়িটা একটা নামকরা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল। এখানে গর্ভস্থ অবস্থা থেকেই বাচ্চাদের শিক্ষা শুরু হয়। জন্মের আগে পর্যন্ত শুধু মায়েদের, জন্ম থেকে তিন বছর পর্যন্ত মা ও শিশু এবং তিন বছর পর থেকে যথারীতি বাচ্চাকে ক্লাস অ্যাটেণ্ড করতে হয়। আজ সেই ভর্তির জন্য ফর্ম দেবে, তাই আমরা লাইন দিয়েছি।”
অবাক যে না হলাম তা নয়। কিছুদূর এগোতেই দেখি, লাইনে দাঁড়িয়ে একটি কুমারী। তাকে জিজ্ঞাসা করি,- “মামণি, তুমি কেন লাইনে?”
মেয়েটি উত্তর দিল- “কাকু, আমি নেট প্র্যাকটিস করছি। সামনের মাঘেই আমার বিয়ে।”
……০……