Home / কিশোর গল্প / ভয়ঙ্কর অতলে দরিয়া – মৌসুমী পাত্র

ভয়ঙ্কর অতলে দরিয়া – মৌসুমী পাত্র

শিল্পী- সোমক সেনগুপ্ত/ ভয়ংকর অতলে দরিয়া
শিল্পী- সোমক সেনগুপ্ত

 

এমন একটা ভয়ঙ্কর মহাপ্রলয় যে ধেয়ে আসছে, সকালবেলাতে ঘুণাক্ষরেও আঁচ পাওয়া যায়নি।

তবে কেউ কি আর পায়নি? খুনখুনে বুড়ি বিজলীবতী নিজের দাওয়াতে বসে লাঠি ঠুকঠুক করতে করতে বলেছিল, “ওরে, গতিক সুবিধের ঠেকছে না। আজ আর কেউ জাল নিয়ে বেরোস নে!”

তা সে বললে কি আর চলে? মাঝসাগরে জাল ফেলে যাদের সংসার চলে, তাদের বেরোতেই হয়। দরিয়ার বাপও বেরিয়েছিল সংগীসাথীদের নিয়ে তার বড় নৌকোয়। ছোট নৌকোটা ঘরেই ছিল। বাপ পইপই করে বলে গিয়েছিল মাকে, “দেখো, দরিয়া যেন না বেরোয় ছোটো নৌকো নিয়ে। আশমানের অবস্থা ভালো বুঝিনা।”

তা মা চোখে চোখে রেখেওছিল খানিকক্ষণ। কিন্তু সেই বা কতক্ষণ নজরদারি করে? তারও তো কাজকম্মো আছে। আর দরিয়ারও বয়স দশ বছর হয়ে গেল। রীতিমতো ভালো নৌকো বাইতে পারে এই বয়সেই। এমনকি, তার বাপ অব্দি একেকসময় দেখে তাজ্জব বনে যায়। জেদাজেদি করে বাপের সংগে সমুদ্রে পাড়িও দিয়েছে কয়েকবার। এমন মেয়েকে রুখবেই বা কে?

মা ব্যস্ত হয়ে পড়তেই বাড়ির পিছন দিকের খাঁড়িতে গিয়ে চুপিচুপি ছোট নৌকোটা টেনে বার করল দরিয়া। ছোট্ট ছোট্ট হাতে প্রাণপণ লগি ঠেলে নৌকো ভাসাল জলে। আহ! কী শান্তি! আর মাত্র সামনের এই বাঁকটা! তাহলেই মায়ের চোখের আড়ালে চলে যাবে সে।

বাঁকটা পেরোতে গিয়েই দূর থেকে মায়ের আর্তস্বর ভেসে এল- “যাসনে রে, দরিয়া, যাস নে! ফিরে আয়! ফিরে আয়!”

কিন্তু দরিয়ার সেসব কথায় কান দিতে বয়েই গেছে। সে নৌকোটাকে নিয়ে চলল আরও দূরের দিকে।

মায়ের গলার আওয়াজ মিলিয়ে যেতেই চারপাশ অদ্ভুত রকমের শান্ত। ছলাৎ ছল নীল জল, দূর দূর যত দূরেই তাকাও না কেন, কোত্থাও কোন জনমানব নেই।

আচমকাই বুকটা ছ্যাঁত করে উঠল তার। অনেকদূরে চলে এসেছে সে। এতদূরে আসেনা অন্য কোনওদিন। চারিদিকে জল, অথই জল। তাদের গেরামটাই বা কোনদিকে? এ কী, আকাশের আলো কমে গেল কেন এত?

শনশন হাওয়া শুরু হয়ে গেছে। আকাশের এককোণ থেকে মত্ত হাতির মত ধেয়ে আসছে বিশাল এক কালো মেঘ।

খানিকটা অন্যমনস্কই হয়ে গেছিল বুঝিবা সে, আর সেই ফাঁকে তার নৌকোটা তীব্র বাতাসের দাপটে ঘুরে গেল বারকয়েক। ফুঁসে ওঠা সমুদ্রের সংগে প্রাণপণ শক্তিতে লড়াই চালাচ্ছে ছোট দরিয়া। কিন্তু উত্তাল সমুদ্রের সংগে কতটুকুই বা যুঝতে পারে ওইটুকু কচি দুখানি হাত? নেতিয়ে পড়ছে দরিয়া, তীব্র কষ্ট আর কান্না ঠেলে বেরিয়ে আসতে চাইছে তার গলা বেয়ে। কোন্‌দিকে তাদের গ্রাম, তাও ঠাহর হচ্ছে না। ঘন অন্ধকার চারিদিক। আকাশ সমুদ্র একাকার করে বিদ্যুতের শাণিত তরোয়াল যেন তাণ্ডবনৃত্যে মেতেছে। তীব্র তার ঝলকানি আর গর্জন।

প্রবল স্রোত এবার খড়কুটোর মতো ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে নৌকোটাকে। বৈঠা দুটো আঁকড়ে বেসামাল নৌকোর খোলের মধ্যে শক্ত হয়ে বসে আছে সে। বড় বড় ঢেউ আসছে একেকটা আর আপাদমস্তক ভিজিয়ে দিয়ে চলে যাচ্ছে।

ঠাণ্ডায়, ঝড়ের দাপটে আর বিদ্যুতের রুদ্ররূপে ঠকঠক কাঁপছে সে। তার চেনা শান্ত সমুদ্র যেন একটা ভয়ঙ্কর রাক্ষসের মত হাঁ করে গিলতে আসছে। তা হতে দেবে না দরিয়া, কিছুতেই না।

কিন্তু প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করার সাধ্য কি তার? সমুদ্রের জল তাকে কতদূরে কোথায় ভাসিয়ে নিয়ে গেল তার ইয়ত্তা নেই। বহু বহু সময় পর অন্ধকার ফিকে হয়ে এল কিছুটা। আর সেই আধো অন্ধকারে কালো একটা চর তার চোখে পড়ল। তাদের গ্রাম হোক বা না হোক, একটা ডাঙা তো পাওয়া যাবে।

বৈঠা নিয়ে আবার প্রাণপণ দাঁড় বাইতে শুরু করল সে। যখন প্রায় কাছাকাছি এসে পড়েছে, সেই সময়ই তিনতলা বাড়ির সমান তীব্র একটা ঢেউ এসে ডুবিয়ে দিল তাকে। হাতের বৈঠা, নৌকা- কোথায় কী ভেসে গেল সে নিজেও জানে না। নোনা জলে নাকানিচোবানি খেতে খেতে অজ্ঞান হবার ঠিক আগের মুহূর্তে কোন একটা নরম জিনিসে তার পা ঠেকে গেল।

 

অনেক… অনেকক্ষণ পর ধীরে ধীরে চোখ খুলল দরিয়া। একটু সময়ই লাগল বুঝতে। বাপ বেরিয়ে যাবার পর নৌকোটা নিয়ে বেরিয়েছিল- তারপর… ঝড় মেঘ বিদ্যুৎ- সমুদ্রের স্রোতে ভেসে যাওয়া – শেষে বিশাল একটা ঢেউ…।

তাড়াতাড়ি করে উঠে বসল সে। আর তখনই তার চোখে পড়ল কালো-সাদায় মেশা পাশের জন্তুটার দিকে। আঁতকে উঠে ছুটে পালাতে চাইছিল সে, কিন্তু পা দুটো যেন গেঁথে আছে মাটিতে। নড়লই না। পাশের জন্তুটা নড়েচড়ে তার দিকে সরে এল আর তখনই তার চোখে পড়ল জন্তুটার নরম, করুণ চোখদুটো! আরে, এটা তো একটা শুশুক! বইতে ছবি দেখেছে, বাবামায়ের কাছে কত গল্প শুনেছে। তাহলে কি এই শুশুকটাই তাকে বাঁচিয়েছে? দরিয়া এবার সত্যিই লাফাতে যাচ্ছিল, এমন সময়ই তার চোখে পড়ল, শুশুকটার ঠিক পিছনেই ফণাতোলা একটা বিশাল সাপ!  প্রাণপণ শক্তিতে শুশুকটাকে এক ঠেলা দিল দরিয়া আর সাপের ফণা আছড়ে পড়ল তাদের দুজনের ঠিক মাঝখানে। সাপটা ফের ফণা তুলে ছোবল মারতে এল দরিয়াকে। আতংকে চোখ বন্ধ করে ফেলল সে। নড়াচড়ার ক্ষমতাও যেন চলে গেছে তার। কিন্তু সেই মুহূর্তেই একটা ঝটাপটির আওয়াজ পেয়ে চোখ খুলে তাকিয়েই হতবাক সে। কোত্থেকে একটা নেউল এসে ঝাঁপিয়ে পড়েছে সাপটার ওপর।

আর ভাবতে পারল না সে। দৌড়তে শুরু করল। একটু দূরে গিয়ে দেখে সেই শুশুকটাও ঘষটে ঘষটে তার পিছন পিছন আসছে। কী মনে হল, শুশুকটাকে কোলে তুলে নিল। ছোটা শুরু করল আবার। এই মাটিটা কেমন যেন। ছোটা যায় না। খালি পা ডুবে ডুবে যায়। মাটি নয়, বালিও নয়। খুব পরিচিত যেন একটা কিছু। অথচ কী যে, সেটা যে ধরতে পারছে না।

বেশ অনেকটা দূরে এখন চলে এসেছে তারা। সাপ বা নেউল কাউকেই দেখা যাচ্ছে না। জায়গাটা কেমন যেন অদ্ভুত। আর অদ্ভুত একটা গন্ধ। আর একটু ছাড়া ছাড়া একটাই ঘাস মাথা তুলে আছে। আবার বেশ খানিকটা জায়গা ফাঁকা।

শুশুকটাকে কোল থেকে নামাল দরিয়া। হাঁফাচ্ছে সে। শুশুকটা মুখ থেকে কিসব আওয়াজ বের করল। স্পষ্ট বুঝল দরিয়া, শুশুকটা বলতে চাইছে, চলো, শিগগির এই জায়গাটা পেরিয়ে চলো।

দরিয়া চাইল এধার ওধার। আর সেই মুহূর্তেই, পায়ের তলায় তীব্র কাঁপন। একটা পাও আর স্থির রাখা যাচ্ছে না। তীব্র ভূমিকম্পের কম্পনের সংগেই যেন অনেক উঁচু কোন পাহাড় থেকে গড়িয়ে পড়তে শুরু করল দুজনেই।

কী হচ্ছে বুঝতে না বুঝতেই আবার দুজনেই সমুদ্রের জলে। জলে তলিয়েই যাচ্ছিল দরিয়া, যদি না শুশুকটা আবার তাকে পিঠে তুলে নিত! ধাতস্থ হয়ে কিছুদূর যাবার পর পিছনপানে তাকাল সে আর তাকিয়েই চক্ষুস্থির!

এতক্ষণ যেটাকে সে চর বলে মন করছিল, সেটা আদৌ কোন চরই নয়। বিশাল চেহারার এক দানব! দানবটা উঠে বসেছে, দাঁড়াচ্ছে এবার। মাথাটা প্রায় আকাশ ছুঁই ছুঁই। একেকটা হাত পা প্রায় একটা দোতলা বাড়ির সমান। যেগুলোকে সে ঘাস বলে ভেবেছিল, সেগুলো আসলে গায়ের লোম। কোমরে একটা চামড়ার মোটা পোশাক। কতবছর ধরে কে জানে ঘুমোচ্ছিল দানবটা, পায়ের দিকটায় সত্যিই ঝোপঝাড় গজিয়ে গেছে।

দানবটা উঠে দাঁড়িয়েছে। কুতকুতে চোখে তাকাচ্ছে এপাশ ওপাশ। আর সেইসময়, দরিয়ার সঙ্গে চোখাচোখি হয়ে গেল তার। ভয়ঙ্কর গর্জনে আকাশ বাতাস বিদীর্ণ হয়ে গেল তৎক্ষণাৎ। দরিয়ার ঠিক পেছনেই প্রবল একটা ঝাপট উঠল জলের। দানবটা থাবা বাড়িয়েছে।

শুশুকটা এদিকে প্রাণপণে চলেছে দরিয়াকে পিঠে নিয়ে। দানবটা এবার এগিয়ে আসছে। প্রচণ্ড একটা ঢেউ আর তার সংগেই আকাশে উঠে গেল ওরা দুজনে। দানবের থাবায় বন্দী দরিয়া আর শুশুক। প্রচণ্ড একটা হাঁ করেছে দানবটা- ভয়ে চোখ বুজে ফেলেছে সে।

দানবটা কী করত কে জানে, কিন্তু কপাল ভালো, তার মুঠোর ফাঁক গলে পড়ে গেল ওরা দুজনেই। এদিকে ততক্ষণে সেই দানবটার পেছনে আরও ঝাঁকে ঝাঁকে দানব এসে উপস্থিত হয়েছে। তাদের হুহুংকারে সমুদ্রের ঢেউও যেন কাঁপছে থরথর।

শুশুকের পিঠে সওয়ার হয়ে প্রচণ্ড দ্রুততায় চলেছে দরিয়া। পাড়ি দেওয়াই শুধু নয়, ঢুকে গেল জলের গভীরে। ভাগ্যে ডুবসাঁতার দেওয়া অভ্যেস আছে তার, দমবন্ধ করে জলের তলায় থাকতে পারে অনেকক্ষণ। জলের তলায় ডুবে, ভেসে যেতে যেতেই শুশুকটার একটা নাম ঠিক করে ফেলল সে। মিশুকা।

কতদূর যাবার পর ঠিক নেই, সমুদ্রের ধারে কিছুটা ডাঙার আভাস পাওয়া গেল। ততক্ষণে মিশুকার গলায় আবার সেই বিচিত্র আওয়াজ। মানেটাও বুঝল সে। ডাঙা এসে গেছে!

সত্যিই ওটা বালি-মাটি তো? চারপাশ ভালো করে জরিপ করল সে। নাহ, সত্যিই সমুদ্রের বেলাভূমি! নেমে এগোতে থাকল দুজনে। সুন্দর একটা ঝাঁকড়া গাছ। লাল থোকা থোকা ফল ধরে আছে। এতক্ষণের ভুলে থাকা ক্ষুধাতৃষ্ণা যেন গাছটাকে দেখেই পেটের মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়ল। নীচের ডালে ধরে থাকা দুটো ফল যেই না ছিঁড়েছে সে, অমনিই গাছটা কুঁকড়ে মুকড়ে গিয়ে তাকে আষ্ঠেপৃষ্ঠে টেনে নিতে থাকল নিজের দিকে।

দরিয়া হাত-পা ছোঁড়ে কিন্তু গাছটার গায়ে যেন আসুরিক শক্তি। মিশুকাও এগিয়ে এসেছে ওকে সাহায্য করতে, কিন্তু ওপর থেকে সেই গাছের কয়েকটা পাতা টপাটপ পড়ল মিশুকার ওপরে আর তৎক্ষণাৎ সারা দেহ চিরে গিয়ে ফোঁটায় ফোঁটায় রক্ত ঝরতে থাকল।

দরিয়া শুরুতে খানিকটা হকচকিয়েই গিয়েছিল। কিন্তু তার মধ্যেও তার মাথায় খেলে গেল যে, এটা একটা রাক্ষুসে গাছ। তাকে নিংড়ে শরীরের সব রস শুষে নেবে! মনে হওয়া মাত্রই তার চুলে আটকানো ক্লিপের ধারালো দিকটা ঝপাঝপ ব্লেডের মত চালিয়ে দিল গাছের ডালগুলোয়।

সংগে সংগেই গাছটা তাকে ছেড়ে দিয়ে বেদনায় যেন ছটফট করতে লাগল। দরিয়া আর দেরি করল না। রক্তাক্ত মিশুকাকে কোলে তুলে নিয়ে ছুট লাগাল। একটু এগিয়েই চিন্তাটা এল মাথায়। যাবে কোনদিকে? একদিকে অথই সমুদ্র আর মিশুকার যা অবস্থা, তাকে পিঠে নিয়ে কতদূর যেতে পারবে সন্দেহ! অন্যদিকে এই জংলি, রাক্ষুসে জায়গা। যে মাটিতে এই ধরনের রাক্ষুসে গাছ গজায়, সে মাটিও খুব সহজ মাটি নয়!

ছুটতে ছুটতেই সাতপাঁচ ভেবে এই বেলাভূমির আরও ভেতরে যাওয়াই সাব্যস্ত করল সে। আগে তার শুশুকবন্ধুকে সারিয়ে তুলতে হবে!

যত ভেতরে যায়, তত অদ্ভুতদর্শন গাছপালা, ঝোপঝাড়। দমবন্ধকরা পরিবেশ! অসহ্য একটা গরম যেন পাকে পাকে জড়িয়ে ফেলতে চায় তাদের! আচমকাই শিরদাঁড়ায় শিরশিরানি ধরানো একটা ফিসফিসে রব যেন ভেসে ভেসে আসতে থাকল চারপাশের গাছপালা ঝোপঝাড় থেকে- হায় হায়! হায় হায়!

থমকে গেল দরিয়া! এগোনো আর উচিত হবে কিনা কে জানে! হঠাৎ করেই একটা লতা জড়িয়ে গেল শুশুকের গায়ে। লতাটা জোরে টানতে গেল দরিয়া, আর লতাটা ছিঁড়ে খানিকটা রস ছিটকে লাগল মিশুকার গায়ে। সঙ্গে সংগেই রক্তপাত বন্ধ। দরিয়ারও হাতে পায়ে কয়েক জায়গায় ছড়ে গিয়েছিল সেই রাক্ষুসে লতার সংগে যুদ্ধ করতে গিয়ে। সেসব জায়গায় লতার রস লাগিয়ে নিতেই ক্ষতগুলো শুকিয়ে যে গেল শুধু তাই না, হাতে পায়ে বাড়তি কিছুটা জোরও পেল। কী মনে হতে সেই লতার বেশ খানিকটা ছিঁড়ে নিয়ে মাথার চুলে বেঁধে নিল সে।

একটা কথা কেমন যেন মনে হল তার। মন্দ থাকলে, ভালোও থাকে। সাপ থাকলে, নেউল থাকে। রাক্ষুসে গাছ থাকলে উপকারী লতাও থাকে।

অকস্মাৎ চারপাশের মাটি থেকে কাঁটাঝোপ গজিয়ে উঠতে থাকল সমানে। যত ছোটে, ততই তার পায়ের তলা কাঁটায় কাঁটায় ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায়, ফেটে চৌচির হয়ে যেতে থাকে, রক্ত ঝরতে থাকে সমানে।

রাক্ষুসে গাছ শুধু একটা নয়, আরও অসংখ্য গাছ এবার তাড়া করে আসছে। অন্ধকারও ঘনিয়ে আসছে। স্থলে স্থান নেই তার, জলেও যে কী ভবিষ্যৎ- তাও জানে না। যে সমুদ্রের জলের জন্য আজ সে অকূলপাথারে, সেই জলের উপর ভরসা করা ছাড়া গতিও নেই।

কতদূর ছুটেছে কে জানে, অবশেষে দেখা মিলল নীল সমুদ্রের। মিশুকাকে কোলে নিয়েই সটান ঝাঁপ দিল সে। সমুদ্রের আর বেশি গভীরে গেল না ওরা। বেলাভূমি বরাবর সাঁতার কাটতে থাকল। প্রায় ঘন্টাখানিক টানা সাঁতার কাটার পর মিশুকার আওয়াজ শুনে বুঝল মিশুকা ওকে পিঠে চাপতে বলছে।

মিশুকার পিঠে সওয়ার হয়ে আরও কতদূর যে গেল ঠিকঠিকানা নেই। সমুদ্রের নীল জল এখন মিশমিশে কালো। আচমকাই অল্প দূরে অন্ধকার-মাখা একটা বিশাল অবয়ব নজরে এল। একটা অতিকায় তিমি। ধেয়ে আসছে ওদের দিকেই। মনকে শক্ত করল দরিয়া। যাই ঘটুক, ভয় পাওয়া চলবে না। ইতিউতি তাকাতে তাকাতেই খেয়াল করল তিমিটার গা ঘেঁষেই নৌকোর মত কী একটা ভাসছে না? মিশুকাও দেখতে পেয়েছে। নৌকোটায় ওঠামাত্রই বিশাল ঝাপটা মেরে তিমিটা যেন চলে গেল তাদের প্রায় উপর দিয়েই। মিশুকাকেও ভাগ্যে নৌকোয় তুলে নিয়েছিল, নইলে কী যে দশা হত কে জানে?

তিমিটা দূরে চলে যেতেই মিশুকাও লাফিয়ে পড়ল জলে। পথ দেখিয়ে নিয়ে চলল আগে আগে। তাও রক্ষে, আজ বোধহয় পূর্ণিমা। জ্যোৎস্নার আলোয় চিকচিক করছে সমুদ্রের ছোটছোট ঢেউ। নৌকো বাইতে এখন আর তত কষ্ট হচ্ছে না ওর। খালি পেটের খিদেটা চাগাড় দিয়ে উঠেছে ফের। খিদের কথাটা মনে হতেই নৌকোর ভেতরটায় একঝলক নজর চালাল সে। চুঁইয়ে আসা চাঁদের আলোয় চোখে পড়ল, নৌকোর ভেতরটা  বেশ বড়োসড়ো। ঠিক তার বাপের বড় নৌকোটার মতন। বাবার কথা মনে হতেই একটা খুব পরিচিত গন্ধের রেশ যেন টের পেল নাকে। তাহলে কি এটাই তার বাবার নৌকোটা? হ্যাঁ, কোন ভুল নেই। এটাই তার বাপের নৌকো। এই নৌকোর কোথায় কী আছে, সবই তার নখদর্পণে। একহাতে বৈঠা সামলে অন্যহাতে খুব সাবধানে চিঁড়ে আর গুড়ের একটা প্যাকেট আর এক বোতল জল বের করে আনল সে।

খেতে শুরু করেই দু’ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ল তার গাল বেয়ে। মা বোধহয় এতক্ষণ তার জন্য কেঁদেই সারা। আর তার বাবা? এই নৌকোটা নিয়েই তো বেরিয়েছিল। তাহলে? কী হল তার?

মনখারাপ নিয়েই খাওয়া সারল সে। টিকে থাকতে হবে তাকে, এই প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও। নইলে বাবা-মায়ের কাছে পৌঁছবে কি করে?

ঝপাং! মিশুকা একগাদা মাছ মুখে নিয়ে নৌকোর মধ্যে ঢেলে দিয়েই ফের লাফিয়ে পড়ল জলে। ভালই হল, নৌকোয় দেশলাই দেখেছে সে। পুড়িয়ে খাওয়া যাবে পরে।

দরিয়া যখন এইসব স্বপ্নসুখে বিভোর, সেই সময়ই গগনভেদী একটা রবে চূর্ণ হয়ে গেল আকাশের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত। মাছধরার জালের মতোই বিশাল একটা জালে আটকে পড়ল দরিয়া আর তার নৌকো। তারপরই প্রবল টান। দরিয়া তার সর্বশক্তি প্রয়োগ করেও সেই সর্বনাশা জালের বাঁধন থেকে নিজেকে ছাড়াতে পারল না। নৌকোসহ প্রবল টানে যেতে থাকল কোন অনির্দেশ্য গন্তব্যের দিকে।

প্রবল ঝড়ে যেমন মাটিতে পড়ে থাকা পাতার টুকরো পাক খেতে খেতে ওঠে আকাশে, সেভাবেই অকস্মাৎ টালমাটাল হয়ে সে উঠতে থাকল আকাশে।

আকাশে পাক খেয়ে খেয়ে জালের মধ্যে বাঁধা হয়ে নৌকোসহ উঠতে থাকল সে, তারপর সহসাই একটা গোঁত্তা খেয়ে সাঁই সাঁই করে নামতে থাকল। জালের দড়ি কেটে কেটে বসে যাচ্ছে শরীরে, চামড়ায় অসহ্য জ্বালা। চরম একটা ভয় গ্রাস করেছে তাকে। কী হচ্ছে? কী হতে যাচ্ছে? সোঁ সোঁ করে ভয়ংকর আওয়াজ উঠল একটা আর দূরে সমুদ্রের চরের দিকে দৃষ্টিপাত মাত্রই ঝুলন্ত অবস্থাতেই তার শরীর যেন পলকের তরে হিম হয়ে গেল।

চরে একটা অদ্ভুতদর্শন প্রাণী। চাঁদের আলোতেও স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, প্রাণীটা উচ্চতায় বড়জোর দরিয়ার কোমর অব্দি হবে। মাথার চুল দুদিকে শক্ত হয়ে বুনো মহিষের শিঙের মতন বেঁকে গিয়েছে। নাকটা অবিকল ঈগলের ঠোঁটের মতন। সরু একটা জলের বোতলের মত শরীর। কালো কুচকুচে লোমে ঢাকা হাত-পা। বিচিত্র চামড়ার পোশাকে ঢাকা দেহ। ছোট ছোট কুতকুতে দুই চোখে পৃথিবীর যাবতীয় ক্রূরতা যেন একসঙ্গে জড়ো হয়েছে। আর সেই চোখদুটো স্থির নিবদ্ধ দরিয়ার উপর।

ওই খুদে খুদে লিকলিকে হাতদুটো ভয়ঙ্কর আসুরিক শক্তিতে দরিয়াকে টেনে আছড়ে ফেলল ডাঙার সামনে। ছটফটিয়ে আর্তনাদ করে উঠল সে। জীবটার হুঙ্কারে এবার তোলপাড় হয়ে গেল সমুদ্রের জল, “কী ভেবেছিস কী তুই? আমাদের এলাকায় অনধিকার প্রবেশের সাহস তুই কোথা থেকে পেলি? জানিস না, সমুদ্রদানোদের এলাকায় মানুষের ঢুকতে নেই? এইটুকু পুঁচকে মেয়ে একটা- তার এত সাহস কোত্থেকে হয়? এখানে আসার শাস্তি একটাই- তোকে শেষ করে দেব আমরা! প্রস্তুত হ!”

দরিয়া ভয়ে ভয়ে দেখছিল এতক্ষণ! কিন্তু শেষের কথায় মরীয়া হয়ে শরীরের সব শক্তি সঞ্চয় করে চিৎকার করে উঠল, “আমার কী দোষ? আমি কি নিজের ইচ্ছেয় এখানে এসেছি? আমার নৌকো ডুবে গেছিল…”

বলতে না বলতেই গর্জন করে উঠল সেই দানোটা, “নৌকো ডুবে গিয়েছিল? মিথ্যে কথা বলার জায়গা পাসনি? তাহলে এই নৌকোটা কোথায় পেলি তুই?”

দরিয়া দানোটার হিংস্র চোখে চোখ রাখল, “সত্যিই বলছি। আমার নৌকোটা ডুবে গেছিল, এই নৌকোটা পরে মাঝসমুদ্রে পেয়েছি।”

“ফের মিথ্যে কথা?”, কুটিল চোখে তাকাল দানবটা, “মাঝসমুদ্রে নৌকোর বাজার বসে, না? ইচ্ছেমত তুলে নিলেই হয়?”

এত কষ্টের মধ্যেও দরিয়ার একটু হাসিই পেয়ে গেল। কিন্তু দানোটার নজর এড়ায়নি। তার সুতীব্র স্বরে খানখান হয়ে গেল চারিদিক, “আমার সঙ্গে তুই মশকরা করিস? এতবড় ধৃষ্টতা তোর? তুই আমাদের বিশালবপু দানোর গায়ে ইচ্ছেমতন লাফিয়ে তার বিশ্রামে ব্যাঘাত ঘটিয়েছিস, আমাদের রাক্ষুসী লালদন্তী গাছের বেশে দুপুরের রোদ পোহাচ্ছিল- তুই তাকেও আঁচড়ে কামড়ে একাকার করেছিস। তার সামনের দুটো দাঁত পড়ে গেছে। এর শাস্তি তোকে পেতেই হবে। তবে তোকে আমরা সরাসরি মারবো না। আর আধঘন্টার মধ্যেই জোয়ার উঠবে। সেই জোয়ারের জলে এই চর তলিয়ে যাবে। আর তার সঙ্গে তলিয়ে যাবি তুইও! হা হা হা হা!”

জালসহ দরিয়াকে বারকয়েক জোরে জোরে আছড়ে ভুস করে সমুদ্রে এক ডুব দিয়ে মিলিয়ে গেল দানোটা। ডুবে যেতে যেতে দরিয়ার উদ্দেশ্যে আরেক দফা সতর্কবাণী দিয়ে গেল দানোটা, “পালাবার চেষ্টা করেও লাভ নেই। পালিয়েই বা যাবি কোথায় তুই? আমাদের দানোদের দল এই চরের চারপাশ ঘিরে রেখেছে। পালাবার চেষ্টা করলেই ডুবিয়ে দেবে তোকে সমুদ্রের জলে!”

দানোটা চলে যেতেই স্তব্ধ হয়ে গেল চরাচর! খালি নীল-কালো ঢেউয়ের চরে পাড়ভাঙার শব্দ! এপাশ ওপাশ তাকাল দরিয়া। চরটা নেহাতই ছোট। বড়জোর তাদের গাঁয়ের পাঠশালার চৌহদ্দির সমান হবে। সমুদ্রের বুকে কোনরকমে মুখ তুলে আছে।

শরীরের নানা জায়গা কেটেকুটে রক্ত ঝরছে, ব্যথাও হচ্ছে খুব। কিন্তু এখন ওসব ভাবার সময় নেই। দানোটা যেটা বলে গেল সেটা যদি সত্যি হয়, তাহলে যেভাবেই হোক আধঘন্টার মধ্যেই তাকে এখান থেকে বেরোতেই হবে। মিশুকার কথা মনে পড়ল তার। ইসসস! এইসময় মিশুকা থাকলে অনেক সুবিধা হত! কী আর করা? অসীম শক্তিতে সেই সর্বনাশা জালের বাঁধন থেকে বেরোনোর চেষ্টা করল সে। কিন্তু সেই জালের বাঁধন থেকে যত নিজেকে আর নৌকোকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে থাকে, ততই সে সর্বনাশা জাল আরও কেটে বসে যায়! দরদরিয়ে রক্ত পড়ছে সারা শরীর জুড়ে। মাথারও একটা জায়গা কেটে গিয়ে রক্তে চুল ভিজে গিয়ে চটচট করছে। সেখানে হাত বুলোতে গিয়ে হাতে একটা লতার মত কী উঠে এল! আরে, এই তো সেই রাক্ষুসে দ্বীপের ঔষধি লতাটা! লতাটাকে ছিঁড়ে রস বের করে সারা গায়ে লাগাল সে। ক্ষতস্থানগুলো জুড়ে গেল নিমেষেই। রক্তপড়া থেমে গিয়ে শরীরে অনেকটা বল ফিরে পেল। কিন্তু এদিকে চরের চারিদিক থেকে জোয়ারের জল এগিয়ে আসছে দ্রুত। নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই বুঝতে পারছে সে, আর দশ-পনেরো মিনিটের বেশি সময় নেই। প্রতি মুহূর্তেই তার মনে হচ্ছে অদৃশ্য এক দঙ্গল রক্তচক্ষু তাকে নিরীক্ষণ করছে! কোনমতে নৌকোর এদিক ওদিক হাতড়ে হাতড়ে একটা ছুরি পেয়ে গেল সে। একটা খাঁজের মধ্যে আটকে থেকে গিয়েছিল ছুরিটা। ছুরিটা দিয়ে দড়িগুলো চটপট কাটতে শুরু করে সে। জোয়ারের জলে ততক্ষণে তার পায়ের পাতা ডুবে গেছে। অবশেষে যতক্ষণে নিজেকে আর নৌকোটাকে মুক্ত করতে পারল সে, ততক্ষণে প্রায় তার হাঁটু অব্দি জল! কোনোমতে নোকোটাকে জলে ভাসিয়ে এক লাফে উঠে পড়ল সে!

নৌকোটা জলে ভাসাতে না ভাসাতেই প্রবল এক জলোচ্ছ্বাস এসে ভাসিয়ে দিল পুরো চরটাকে। আর সেই সংগে লাফ দিয়ে কোন একটা প্রাণী উঠে পড়ল তার নৌকোয়!

ঘন অন্ধকার। খালি সমুদ্রের বুকে ফসফরাসের আলো মিটিমিটি করে জ্বলছে। একটা দমকা হাওয়ায় প্রাণীটার গন্ধ ভেসে এল তার নাকে। এ গন্ধটা তার বড্ড চেনা! মিশুকা!

মিশুকা ততক্ষণে লাফিয়ে পড়েছে তার কোলে। একটু আদর করেই ছেড়ে দিল দরিয়া। সময় নেই, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই ভয়ানক জায়গা পেরিয়ে যেতে হবে!

আচমকাই চাঁদের ম্লান আলোয় দরিয়ার চোখে পড়ল একটা জাল। তাদের দিকেই এগিয়ে আসছে! সর্বনাশ! সেই দানোটা আবার জাল ছুঁড়েছে তাদের ধরার জন্য। তাড়াতাড়ি করে নৌকো উল্টোদিকে ঘোরাল সে।

উল্টোদিকে যেতে গিয়ে দেখে সেদিক দিয়েও একটা জাল এগিয়ে আসছে। ছুরিটাকে হাতে নিল সে। জালটা কাছাকাছি আসতে না আসতেই তীরবেগে পাশ কাটিয়ে পেরিয়ে যাবার চেষ্টা চালাল সে। পেরিয়েও গেল। কিন্তু দুদিক থেকে দুখানা জাল সমানে এপাশ ওপাশ তাড়া করতে থাকল তাদের।

চাঁদ আকাশের এপাশ থেকে ওপাশে ঢলে পড়ল, কিন্তু জালদুটো ওদের তাড়া করা আর থামাল না।

একটানা এতক্ষণ যুঝে শরীরের বল ক্রমেই কমে আসছে দরিয়ার। তবুও অপরিসীম জেদে সে নৌকো ছুটিয়েই চলল। তার আন্দাজ বলছে, আর কিছুক্ষণ পরেই ব্রাহ্মমুহূর্ত! সূর্যের আলো না ফোটা  অব্দি তাকে লড়াই চালাতেই হবে।           কিন্তু ঠিক সেই মুহূর্তেই একটা জাল এসে আষ্ঠেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরল নৌকোটাকে। মিশুকার গলার আওয়াজে ফুটে উঠল বিপদসংকেত। কোনমতেই আর রক্ষা পাওয়া সম্ভব নয় বুঝে জলেই লাফ দিল দরিয়া।

তৎক্ষণাৎ মিশুকা তাকে তুলে নিল পিঠে। পুবের আকাশ ফরসা হল সামান্য। পিছনে তাকিয়ে দেখল দরিয়া, সেই জালদুটো নৌকোটাকে নিয়ে ধীরে হীরে ডুবে যাচ্ছে সাগরের অতলে।

পরের সারাদিন কখনো সাঁতার কেটে, কখনো মিশুকার পিঠে চেপে পাড়ি দিল দরিয়া। বেলাশেষের মুখে চোখে পড়ল ডাঙা। মিশুকার গলায় ঘনঘন আনন্দের শিস! ক্লান্ত চোখদুটো মেলে তাকাল দরিয়া। কেমন চেনা লাগে যেন!

 

দরিয়ার মা অন্ধকার ঘরের বাইরে বসে চোখের জল ফেলছিল! দরিয়া চলে যাবার পর থেকেই তার জীবন আঁধার! দরিয়ার বাবাও সমুদ্রের ঝড়বৃষ্টিতে পড়েছিল। বিপদ বুঝে নৌকো ছেড়ে দিয়ে  চেনা একটা স্টিমার পেয়ে সেটায় উঠে ফেরত আসে। গতকালই ফিরে মেয়ের খোঁজে ঘুরছে পাগলের মত!

বসে বসে কাঁদছে দরিয়ার মা, এমন সময় কচি কচি দুটো হাত জড়িয়ে ধরে তার গলা- মা!!

আবারও তার মায়ের দুচোখে দুকূল ছাপানো কান্না! আনন্দের!

মিশুকা একটু দূরের থেকে দেখছিল তার সাথীকে। এবারে একটা আনন্দের আওয়াজ তুলে ঝাঁপিয়ে পড়ল জলে।

……০……

 

 

 

 

 

 

 

Leave a comment

Check Also

শিল্পী- সোমক সেনগুপ্ত/ আপডেট

আপডেট – যশোবন্ত্ বসু

স্মৃতিমেদুরতা বিষয়ে বলতে গেলে সেই লোডশেডিংবিধৃত সন্ধেগুলির কথা বলতে হয় সুলতানা রিজিয়া ! হৃদমাঝারের মফস্‌সলি …

দু’একটা সত্য কথা – সুদীপ্ত বিশ্বাস

মাত্র ১০০০০ বছর আগে কোনো ধর্মই ছিল না। ছিলনা ধর্ম-ধর্ম করে মানুষের সাথে মানুষের বিভেদ। …

শিল্পী- যামিনী খাঁ

আজ অভিষেক – নির্মাল্য ঘরামী

    -মনে আছে তো, পুলিন বলছিল, -তরশু তোর আবার হাতে রাজকাজ। বলছিল আর মিটমিট …

১৯৭৫ থেকে ১৯৮১: মুজিব হত্যা ও সামরিক শাসনে বাংলাদেশ – নির্মাল্য ঘরামী

বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা পায়। সেই সময়ের ঘটনাবলী আমরা সবাই কমবেশী জানি। বিশেষ করে ১৯৭১ …