Home / গল্প / ডুলুং পাড়ের সিঁড়ি -নির্মাল্য ঘরামী

ডুলুং পাড়ের সিঁড়ি -নির্মাল্য ঘরামী

dulung-parer-siri-ng

খোলা জানালা দিয়ে গণুবাবুর দৃষ্টি চলে গেল ডুলুং-এর দিকে। আগের সেই বেগবতী দিন আর নেই। মজে গেছে নদীটা। যেভাবে তাঁর সূর্য অস্তমিত হয়েছে, ঠিক সেইরকম ছোটবেলার দেখা, অনুভবে পাওয়া প্রাণচঞ্চলা ডুলুং-এর দিন-ও ঘনিয়ে আসছে। নিশ্চিত তিনি। তবু সে একটা চেষ্টা করে চলেছে। মরীয়া হয়ে। কিন্তু তাঁর তো কোন উপায়ও নেই, শুধু চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া।

(২)
-স্যার, ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বারান্দায় পঞ্চায়েত সমিতির নতুন সভাপতিকে আপ্যায়ন করে তাঁকে নিয়ে এই বিল্ডিং-টার এটা সেটা দেখাতে দেখাতে হঠাৎই করিডরে থেমে গিয়ে শামলসাহেব বলে উঠলেন, -দেখেছেন স্যার, কেউ কোনদিন নজর দেয় নি। এত বড় একটা স্বাস্থ্য কেন্দ্র, এত মানুষ এটার উপরে নির্ভরশীল, অথচ কেউ কোনদিন এতটুকু ফিরেও তাকায় নি।
-আগের লোকজন কী করল? একটু কড়া গলাতেই দাবড়ানি দিয়ে নতুন সভাপতিসাহেব বললেন, -বলি তাদের দিয়ে কিছু করাতে পারলেন না, অ্যাঁ?
-সে তো স্যার বুঝতেই পারছেন। গ্রীজ দেওয়া গলায় শামলসাহেব বললেন, -স্যার, আপনারা যা সিদ্ধান্ত নেবেন, আমি তার উপরে কি করে কথা বলব?
-সে না হয় বুঝলাম। নতুন সভাপতিসাহেব গ্রীজটাকে গলাস্থ করে আত্মপ্রসাদভরা গলায় বললেন, -সিদ্ধান্ত আমাদের-ই নিতে হবে। কিন্তু পেশেন্ট-দের বাড়ির লোকেদের একটা বসার জায়গা নেই। তেষ্টা পেলে জল খাওয়ার একটা কল পর্যন্ত নেই। চলে এভাবে?
-ভেবে দেখুন স্যার, গণুবাবুর অদূরেই দেওয়ালের ঠিক ওপাশে পঞ্চায়েত সমিতির নতুন সভাপতিসাহেবের সঙ্গে দাঁড়িয়ে শামলসাহেব বলছিলেন, -কিভাবে আমাদের দিন কেটেছে। পেশেন্ট পার্টি আজকাল আর এইসব কথা শুনতে চায় না। কিছু হলেই শুধু আমাদের খুঁত ধরে। ধমকি দেয়।
-ঠিক আছে, আত্মপ্রত্যয়পূর্ণ গলায় নতুন সভাপতিসাহেব বললেন, -আপনি প্ল্যান করুন। জেলা পরিষদ থেকে টাকা নিয়ে আসার দায়িত্ব আমার।
-স্যার, আপনি এসেছেন, আর চিন্তা নেই। তোষামুদে গলায় শামলসাহেব বললেন, -আপনাকে তো আমি অনেকদিন ধরেই দেখছি। একাহাতে এদের এতদিনের দুর্গ ধূলিসাৎ করেছেন। ঠিক এভাবেই এই অনুন্নয়নকে দূর করে দিন স্যার।
-হাঃ, হাঃ। দেখা যাক। হাসলেন সভাপতিসাহেব। বললেন, -তা তাড়াতাড়ি প্ল্যান বানান। আর হ্যাঁ, ব্লক হেলথ অ্যাণ্ড ফ্যামিলি’র মিটিং-টা ডাকতে দেরী করবেন না যেন। সব হিসাবপত্র ঠিকভাবে পেশ করা চাই।
-আপনি নিশ্চিত থাকুন স্যার। শামলসাহেব তড়িঘড়ি তাঁকে আশ্বস্ত করে বললেন, -আপনি যা বলেছেন, অক্ষরে অক্ষরে পালন করব।
-মনে থাকে যেন।
-ভুল হবে না স্যার। তা, বলে হাত একটু কচলে নিয়ে বললেন, -চলুন স্যার পুরো জায়গাটা আপনাকে ঘুরিয়ে দেখাই। তাহলে একটা ধারণা হবে। আমরাও আপনার উন্নয়নে শরিক হতে পারব।
-চলুন, আপনি দেখাতে দেখাতে যান।

 

(৩)
একেবারে ডুলুং নদীর ধারেই এই ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটা। আশে-পাশের এলাকায় বিনায়ক শামলের ডাক্তার হিসেবে বেশ নামডাক আছে। তিনিই এখানকার ব্লক মেডিক্যাল অফিসার অব হেলথ। কিন্তু পদটা প্রশাসনিক হওয়ায় তাঁর রুগী দেখার কাজকর্মে প্রায়ই ছেদ পড়ে। তবুও এইসব প্রত্যন্ত এলাকায় ডাক্তারের নিতান্ত অভাব থাকায় অন্য কেউ না থাকলে নিজেই কাজ চালিয়ে নেন। যেহেতু অনেকদিন হয়ে গেছে এই লাইনে, আর নিজেও এই এলাকারই লোক, তাই লোকজন তাঁকে পেলে ভরসা পায়। তা গণুবাবুও তাঁর উপরে সর্বদা আস্থা রেখে চলেন। আর শামলসাহেব ছিলেন গণুবাবু বলতে বিশেষ অজ্ঞান।

তবে পঞ্চায়েত সমিতির নতুন সভাপতিসাহেবের আগমন বার্তা শোনা মাত্রই দেখা না শেষ করে শামলসাহেব যে তাঁকে এভাবে ফেলে রেখে চলে যবেন, আশা করেন নি গণুবাবু। অন্তত তাঁকে দেখে নিয়ে যেতে পারতেন। তাঁর সঙ্গে এত দিনের সম্পর্ক। আর কতক্ষণ-ই বা লাগত?
অথচ!
নিদেনপক্ষে কারুর হাতে তাঁকে ছেড়ে যেতে পারতেন যেভাবে বিয়ে বাড়িতে কর্তামশাই গণ্যমান্য অতিথিকে দেখভালের জন্য কাউকে রেখে তবে নতুন অতিথি আপ্যায়নে যান।
কিন্তু তা যে হওয়ার নয়। শামলসাহেব আগের মতন-ই আছেন- তবে তাঁর কাছে নয়, নিজের কাছে, নিজের বিবেকের কাছে। নতুন সভাপতিকে সবকিছু দেখিয়ে-টেখিয়ে উনি কখন ফিরবেন, সেই সময়ের জন্য অপেক্ষা করে থাকা ছাড়া আর কিছু করার নেই। বিরক্ত-ক্লান্ত-রিক্ত গণুবাবু চোখ সরিয়ে নিলেন জানালা থেকে।

বেশ অনেকদিন আগে ক্ষমতার মগডালে বসে থাকার সময়ে সেবারে গণুবাবু কিছু না বলে হঠাৎই চলে এসেছিলেন এখানে। ভেবেছিলেন যে প্রেসারটা একটু মেপে নেওয়া যাক। তা উনি আসতে না আসতেই হুলুস্থুল পড়ে গেল। ড্রাইভারকে দিয়ে খবর পাঠিয়ে সবে ধীরে সুস্থে উনি গাড়ি থেকে নেমে সিঁড়ি ভেঙে উপরে উঠবার উপক্রম করেছেন, দেখলেন যে শামলসাহেব সবকিছু ফেলে প্রায় ছুটেই এগিয়ে আসছেন। তীক্ষ্ণদৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখলেন যে তাঁর হাতে তখনো কলমটা ধরা আছে।
-স্যার, আমাকে একবার বলবেন তো? অনুযোগের গলায় জানালেন শামলসাহেব, -আমিই চলে যেতাম আপনার কাছে। গিয়ে দেখে দিয়ে আসতাম।
-ছোট্ট একটা কাজে এসেছি সাহেব। ধীর গলায় উনি বললেন, -আমরা জনগণের সেবক, তাদের বিঘ্ন ঘটিয়ে নিজেদের কাজ হাসিল করতে চাই না।
-তা আর জানি না স্যার! উনি তোষামুদে গলায় বললেন, -ব্লকের সবাই জানে আপনার জীবনযাত্রা অতি সাধারণ।
-একটা কাজে এদিকে এসেছিলাম। গণুবাবু বলে চললেন, -ভাবলাম যে আপনার এখান থেকে একটু ঘুরে যাই।
-ভিতরে চলুন স্যার, শামলসাহেব বললেন, -এখানে দাঁড়িয়ে থাকবেন কেন?
-এই এসেছিলাম একটু প্রেসারটা মাপাতে, বলতে বলতে একগাদা রোগীকে পাশ কাটিয়ে শামলসাহেবের পিছন পিছন পেশেন্ট দেখার ঘরটাতে ঢুকে পড়লেন গণুবাবু। ভিতরে থাকা লোকদেরকে তখন বাইরে বের করে দিচ্ছিল নার্সটি। সামনের চেয়ারটা দেখিয়ে শামলসাহেব বললেন, -বসুন স্যার।
চেয়ারটায় বসতে বসতে গণুবাবু না জিজ্ঞেস করে পারলেন না, -আপনি আজ একা নাকি?
-হ্যাঁ স্যার। শামলসাহেব সখেদে বললেন, -অতনুর এখন ডিউটি নেই। বিতান ছুটি নিয়েছে। মৃন্ময়কে একটা কাজে সদরে পাঠিয়েছি। অগত্যা আমাকেই টানতে হচ্ছে। তা স্যার, একটা চা বলি?
-নাহ। ছেড়ে দিন। হাত নাড়িয়ে গণুবাবু বললেন, -এই সবে একটা মিটিং থেকে চা-টা খেয়ে ফিরছি। এবারে বাড়ি ফিরে খাওয়া-দাওয়া সারব।
-স্যার, আপনি তো অনেকদিন পরে এদিকে এলেন। একটু চা বলি, প্লিজ না করবেন না।
-ঠিক আছে, বলে চারিদিকে চোখ বোলাতে বোলাতে বললেন, -আপনি চা বলুন, তবে শুধু চা-ই। আর চা আসতে আসতে প্রেসারটা দেখে দিন।
প্রেসার দেখা হয়ে গেলে পর তৃপ্তিতে চা খেত খেতে হঠাৎই চোখ চলে গিয়েছিল দরজার দিকে। সেখানে তখন অগুনতি লোক ভিড় করে আছে দেখাবার জন্য। তাদের অনেকেরই চোখের দৃষ্টিটা সেদিন খুব স্বাভাবিক লাগেনি। তবে পাত্তা দেন নি। এই কালো-কালো বেঁটে-বেঁটে লোকগুলো আর ডাক্তার দেখাবার সময় পায় না!
অথচ আজ সেই দৃষ্টিই ফুটে উঠছে তাঁর চোখে। আক্রোশ!
তবে অক্ষম……!

 

বেশ অনেক্ষণ পরে শামলসাহেব ফিরলেন। ততক্ষণ উনি ওইভাবেই বসে ছিলেন। দেঁতো হাসি হেসে শামলসাহেব বললেন,
-হেঁ হেঁ, আপনাকে একটু ওয়েট করতে হল। বুঝতেই পারছেন দাদা……
দাদা!
একটা যেন বাজ পড়ল তাঁর গায়ে। শামলসাহেবের থেকে স্যার সম্বোধন শুনে তিনি চিরটাকাল অভ্যস্ত। কিছুদিন আগে সেবারে যখন দেখিয়ে গেছিলেন, তখন স্যার না বললেও দাদা বলেননি শামলসাহেব। কিন্তু সেই ডুলুংও নেই, আর তাঁর সেই প্রতাপ-ও অস্তমিত। নিয়তি বড় নিষ্ঠুর। হয়তো সবার ক্ষেত্রেই।
-দাদা, আপনি এই টেস্টগুলো করিয়ে একবার দেখিয়ে নিয়ে যাবেন। এমনিতে কোন সমস্যা নেই। তবে বয়স হচ্ছে তো।
-কোথায় করাই বলুন তো?
-সেই, যেখানে আগের দিন করালেন। রঞ্জিতের প্যাথ ল্যাবে। ওই এখানে সবচেয়ে ভালো রিপোর্ট দেয়।
-আর কোথাও যদি করাই?
কিন্তু কিন্তু করে কথাটা জিজ্ঞেস করেই ফেললেন তিনি।
এই কিন্তু কিন্তু করার কারণ আছে। বছর কয়েক আগে রঞ্জিত ছোকরা তাঁর কাছেই এসেছিল। অন্যদের মতনই বিশেষ দরকারে। এখানকার একটা অঞ্চল অফিসে কনট্রাকচুয়াল রিক্রুটমেন্টে সে আবেদন করেছিল। যোগ্যতা অনেক বেশি থাকলেও সে বাইরের থেকে এসেছে। তাছাড়া এলাকার লোকজনের চাপ আছে। শেষে স্থানীয় একজন ছেলেকে তাঁরা বেছে পাঠিয়েছিলেন, ইন্টারভিউতে গাদা গাদা মার্কস ঢেলে দিয়ে। তবে তার যোগ্যতায় ঘাটতি থাকায় সে শেষ অবধি চাকরিটা পায়নি। উপরে স্ক্রুটিনিতে আটকে গিয়েছিল। এদিকে প্যানেল করে না পাঠানোয় সেই চাকরিটা আর কেউ পায়নি। ফলে যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও রঞ্জিত বঞ্চিত হয়েছিল। একেবারে শেষের দিকে সে নিজেই সরাসরি এসেছিল গণুবাবুর কাছে। তিনি তখন সকালে উঠে দাঁত মাজছেন। এই তো সেদিনের কথা যেন।
-স্যার, খুব সঙ্কুচিতভাবে সে বলেছিল, -যদি একটু দেখে দেন।

-সে দেখা যাবেখন। তিনি হাত নাড়িয়ে মাছি তাড়ানোর ভঙ্গীতে বলেছিলেন, -আজ পার্টির মিটিং-এ কথাটা না হয় তুলব।
-স্যার যদি একটু সাহায্য করেন। একটু চুপ করে নির্বিকার গণুবাবুকে দেখতে দেখতে রঞ্জিত বলেছিল, -আমিও আপনার যথাসাধ্য কাজে লাগার চেষ্টা করব।
বলে কী ছোকরা! ও কি টাকা দেওয়ার কথা বলছে? কত টাকা দিতে পারবে ও? ও কি জানে তাঁর আর্থিক সামর্থ্য? গিধনি-বারিপাদা আর গোপীবল্লভপুর-বাংরিপোসী রুটে দু’টো বাস চলে। সঙ্গে অন্যের নামে হাট, ঘাট, ঠিকাদারী আর সুদের ব্যবসা মিলিয়ে না হলেও বছরে লাখ তিরিশেক তাঁর হেসে খেলে রোজগার হয়। তাছাড়া বিভিন্ন চাকরীর ইন্টারভিউয়ের সময়ে একটা মোটা অংক নগদে প্রাপ্তি হয়েই থাকে। তবে ঝাড়গ্রামের উপকন্ঠে গেস্ট হাউসটার কথা তিনি ছেড়েই দিচ্ছেন। কেননা এক্সট্রিমিস্টদের দাপটে ইদানীং সেদিকে ট্যুরিস্ট আসাই কমে গিয়েছে।
নাকি ছোকরা অন্যকিছু বলতে চাইছে?
ভালো করে তিনি ওর দিকে ঘুরে তাকালেন। সেদিনের এই চ্যাংড়া! তায় আবার বাইরে থেকে এসেছে। কত হাতি গেল তল! আর…এত স্পর্ধা ভাল নয়!
এই মাল আবার আমার কী কাজে লাগবে? অবাক হয়ে নিজেকেই নিজে শুধিয়েছিলেন। চারিদিকে এর মত জনে জনে সব ঘুরে বেড়াচ্ছে একটু প্রসাদ পাওয়ার জন্য! আগেকার দিন হলে ঘাড় ধাক্কা দিয়েই ওকে উঠোন থেকে নামিয়ে দিতেন। তবে ইদানীং……।
কিন্তু স্তম্ভিত হয়ে গেছিলেন ছেলেটিকে দেখে। তাঁকে দেখতে দেখতে ভিতরে ভিতরে দুমড়ে-মুচড়ে গেলেও ভেঙে সে পড়েনি। লোক চরাবার অভিজ্ঞতা তাঁর কম নয়। মুখটা শক্ত করে তাকে বলেছিলেন,
-দেখা যাক কী হয়। তা, তুমি এখন আসতে পার।
তা এই রঞ্জিতকেই কিছুদিন আগে তিনি ডেকেছিলেন তাঁর বাড়িতে। সে ব্লাড নিয়ে যাবে, পরে রিপোর্ট পাঠিয়ে দেবে, বিনিময়ে তার নায্য ফীজ তিনি দিয়ে দেবেন। কিন্তু ছোকরা ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে না করে দিয়েছিল। বলেছিল উনি যেন একসময় নিজেই চলে আসেন। ও দেরী করাবে না।
তা সেবারে তিনিই গেছিলেন। উপায় কী?
সেদিন মনে হয় ডুলুংয়ের অন্য পাড়ে ক্রমান্বয়ে প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল তাঁর বহুদিন পূর্বের সেই মনসিজ উক্তি-
এত স্পর্ধা ভাল নয়!!! নয়…। নয়…………।
সময় বড় নিষ্ঠুর। শোধ সে তুলবেই।
কী আর করবেন?
মনে হয়েছিল ব্লাড নেওয়ার সময়ে যেন তাঁর দিকে তাকিয়ে বিদ্রূপের মুচকি মুচকি হাসি দিচ্ছে রঞ্জিত। ঠিক যে উপেক্ষার হাসিটা তিনি ওকে দিয়েছিলেন তাঁর বাড়িতে। হাসিটা একই আছে, শুধু স্থান আর পাত্র বদলে গেছে।
-বুঝলেন না দাদা, হাসলেন শামলসাহেব, -ভাল রিপোর্ট হাতে পেলে চিকিৎসায় প্রচুর সুবিধে হয়। আমি আপনার সংকোচের কারণটা বুঝি, কিন্তু……। বয়স হচ্ছে আপনার। ভালর জন্যই বলছি দাদা।

 

সিঁড়িটা দিয়ে নামতে নামতে কী মনে হতে সহসা পিছনপানে চেয়ে দেখলেন উনি। যে অনুচ্চ সিঁড়িটা দিয়ে উনি উঠতে না উঠতেই সাড়া পড়ে যেত চারিদিকে, তা এখন ইতিহাস। বদলে গেছে শুধু রঙ্গমঞ্চের অভিনেতারা। আর সব হারিয়ে যাবে, কালের স্রোতে ঢাকা পড়ে যাবে, শুধু টিকে থাকবে এই সিঁড়ি, শাশ্বত, চিরন্তন সত্যের প্রতীক হিসেবে। সব রঙ্গমঞ্চেই সিঁড়ি দরকার!

Leave a comment

Check Also

স্বীকারোক্তি

স্বীকারোক্তি- ইন্দ্রাণী ভট্টাচার্য্য

    আজই ফোনটা ডেলিভারি দিয়ে গেলো। অনলাইনে একবার দেখেই ভারি পছন্দ হয়ে গেছিল সমীর …

দর্পণে

দর্পণে – নির্মাল্য ঘরামী    

    -চল, আমি জোরের সঙ্গে বললাম, -ওসব একদম ভাবিস না। তোকে এতদিন পরে পাচ্ছি, …

ফয়সালা

ফয়সালা – নির্মাল্য ঘরামী

  -দেখুন স্যার। বলে সিকিউরিটি গার্ডটি বিজয়ীর দৃষ্টিতে মহাকুলসাহেবের দিকে তাকালো। তার হাতে ধরা ব্যাগটির …

রক্তগোলাপ/ মৌসুমী পাত্র/ পুণ্যতোয়া ধর

রক্তগোলাপ – মৌসুমী পাত্র

  একটা মোটা দড়ি থেকে পাশাপাশি ঝোলানো সারি সারি মৃতদেহ। ছাল ছাড়ানো। গত কদিন ধরেই …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *