Home / কিশোর গল্প / ভালুক পেলো শালুক -মৌসুমী পাত্র

ভালুক পেলো শালুক -মৌসুমী পাত্র

সূর্যটা এবার একটু ঘুমোনোর তাল করছে বোধহয়। পশ্চিমদিকে গড়াতে শুরু করেছে। বেলা তো কম হল না। ভালুকটার অবশ্য সেদিকে হুঁশ নেই। সে আপনমনে ভারিক্কি চালে হেঁটে চলেছে তো চলেইছে। জঙ্গলটা শেষ হয়ে বেশ একটু ফাঁকা মাঠমতো জায়গা। আর তার ধারে একটা ছোটোখাটো পুকুর। ভালুকটা সেখানে এসে একটু থমকাল। তারপর গুটিগুটি পায়ে পুকুরটার কাছে গিয়ে মুখ ডুবিয়ে জল খেলো একটু। ফিরে আসতে যাবে, এমন সময় ভালুকটার নজরে এল, পুকুরটার ঠিক মধ্যিখানে ভারি চমৎকার খানকয়েক গোলাপী রঙের, লাল রঙের শালুক ফুল আশপাশ আলো করে ফুটে রয়েছে। সাথেসাথেই ভালুকটার মনে হল, আরে আমি যখন ভালুক আর ওটা যখন শালুক ফুল, তখন আমার হাতেই নিশ্চয়ই শালুকফুল সবচেয়ে বেশি মানাবে। ভালুকের হাতে শালুক! কথাটা মাথায় আসতেই তার তিড়িং তিড়িং করে লাফাতে ইচ্ছে করল। কিন্তু তোলে কী করে? মাঝপুকুর অব্দি যাওয়া তো তার পক্ষে প্রায় অসম্ভব। ভাবতে না ভাবতেই তার নজর গেলো হাঁসগুলোর দিকে। দিব্যি পুকুরের বুকে সাঁতার কেটে বেড়াচ্ছে। হাঁক দিল ভালুক, “ও হাঁস দিদিমণিরা, এদিকে একটু শুনে যাও তো দেখি।”

bhaluk_pelo_shaluk
bhaluk_pelo_shaluk

হাঁসগুলো তরতর করে জল কেটে কেটে এল ভালুকের কাছে, “কী বলছো, ভালুকভায়া? তাড়াতাড়ি বলো, এখনো আমাদের অনেক সাঁতার কাটা বাকি। সবে চারশ’ মিটার ফ্রিস্টাইল শেষ হোলো। এরপর ব্রেস্ট স্ট্রোক, ডাইভিং সব বাকী।”
“তোমরা আমাকে কয়েকটা শালুকফুল এনে দিতে পারো?”
“ কেন, শালুকফুল দিয়ে তুমি কী করবেটা শুনি?”
“সে আমি যাই করি না কেন! তোমাদের আনতে বলছি, এনে দাও।”
ভালুকের কথা শুনে হাঁসগুলোর খুব রাগ হয়ে গেল। এ আবার কেমনতর কথা! এমন ভাব করছে যেন ওরা তার হুকুমের চাকর! হাঁসগুলো গলা তুলে বলল, “পারবো না। আমাদের কারণ বলতে হবে।”
ভালুকটারও জেদ চেপে গেছে, “আমি বলবো না। কিছুতেই বলবো না।’’
হাঁসগুলো হলুদ হলুদ চ্যাপ্টা ঠোঁট বেঁকিয়ে টেরিয়ে বলে ঊঠল, “এটা আমাদের পুকুর। এই পুকুর আমারাই রোজ দেখাশুনো করি। এর ভালোমন্দের সব দায়িত্বই আমাদের। ফলে তোমার আবদার আমরা মানছি না, মানব না।”
বলেটলে তারা আবার মাঝপুকুরে গিয়ে সাঁতার কাটতে লাগল। ভালুকটা এবার তাদের কতো অনুনয় বিনয় করল, কিন্তু হাঁসের ঝাঁক আর তার দিকে ফিরেও তাকাল না।
বেচারী ভালুক আর কী করে? মনের দুঃখে সে ফেরার রাস্তা ধরল।
একটুখানি এগিয়েছে কি এগোয়নি, দেখা একটা শিয়ালের সাথে। আর শিয়ালরা যে বেজায় চালাকচতুর হয়, এ তো সবাই জানে।
আমাদের এই ভালুকটা শিয়ালকে দেখতে পেয়ে তার সমস্যার কথা খুলে বলল। শুনেটুনে শিয়ালটা অত্যন্ত গম্ভীরভাবে মাথা নাড়ল। মাথাটাথা ঝাঁকানো শেষ হলে পর সে মুখ খুলল, “দেখ ভায়া, আমি এমনিতে আজকাল আর বিশেষ উপদেশ টুপদেশ দি না। অনেকদিন হোলো রিটায়ার করে গেছি। নেহাত তোমার কথা তো আর ফেলতে পারি না, তাই। শোন, আজ হাটবার। গনপুরের জঙ্গলে আজ হাট বসেছে। ওখানে চলে যাও। হাটে তো সবরকমের জিনিসই বেচতে আনে। মনে হয়, শালুকফুল পেয়ে যেতেও পারো।”
শিয়ালের কথা শুনে ভালুকটা ভারি খুশি! পারলে জড়িয়ে ধরে আদর করে আর কি! শেয়ালকে অনেক অনেক ধন্যবাদ টাদ দিয়ে সে গনপুরের জঙ্গলের পথ ধরল।
গনপুরের জঙ্গল মেলা পথ। পৌঁছতে পৌঁছতে বেলা প্রায় পড়েই এলো। মেলায় ঢুকে একদম সামনে যাকে পেল, তাকেই জিজ্ঞেস করল, “আচ্ছা ভাই, এখানে শালুক কোথায় পাওয়া যাবে বলতে পারো?”
লোকটা তো ভালুকের কথা কিছুই বুঝল না। একটা অতিকায় ভালুক দেখল চোখের সামনে আর তার গাঁক গাঁক আওয়াজ শুনল। আর সেখানেই সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল।
পরের জন এক জিলিপিওয়ালী। সে এতোই মন দিয়ে জিলিপি ভাজছিল যে, একখানা আস্তো ভালুক কখন তার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে, সে খেয়ালই করেনি। আগের থেকে শিক্ষা নিয়ে ভালুকটা মৃদুস্বরে গলাখাঁকারি দিল। সে ঘাড় না তুলেই বলে কড়াইয়ের তেলে জিলিপির প্যাঁচ মারতে মারতে বলে উঠল, “পাঁচখানা জিলিপি একসঙ্গে নিলে কুড়ি। আর তার কম নিলে এক একটা পাঁচ টাকা করে পড়বে।”
চটেমটে ভালুক হাঁকল, “ধুত! জিলিপির দাম কে জানতে চেয়েছে! আমি জানতে চাই, এখানে কোথায় শালুক পাওয়া যাবে?”
আগেরজনের মতো এও শুধু গাঁক গাঁক শব্দই শুনল। তবে এর সাহস বেশি বলে এ পাঁচমিনিট অজ্ঞান হয়েই উঠে গেল।
মুহূর্তের মধ্যে রটে গেল, মেলায় ভালুক এসেছে। দু’ একজন আবার ভাবল, কেউ বোধহয় ভালুকটাকে বিক্রি করতে এনেছে। কেনার আগ্রহও প্রকাশ করল কেউ কেউ। অনেকে আবার এমনও মত প্রকাশ করল যে, কোন ভালুকওলা হয়তো ভালুকনাচ দেখাতে এসেছে। মোটকথা, মত দেওয়া নেওয়ার লোকের অভাব হল না। তবে কিনা, সবই আড়াল থেকে। উৎসাহী দু’চারজন আবার মোবাইলে ছবিও তুলে রাখার চেষ্টা করল। যারাই ফোটো তুলতে গেল, ভালুকটা তাদের দেখতে পেয়ে শালুকের কথা শুধোতে গেল। আর সবাই পটাপট ওখানেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলল।
ভালুকটার কিন্তু এসবে খেয়াল নেই। সে অবাক হয়ে একবার ভাবল, দোকানীরা সব গেল কোথায়? তবে কিনা ভাবনাটাকে পাত্তা দিলে তো আর তার চলে না। সে এসেছে শালুকের খোঁজে। মন দিয়ে সে তাই শালুকের সন্ধানে লেগে গেলো। মাটিতে, ঠেলাগাড়িতে সার সার পসরা। সব বেবাক ফাঁকা। ক্রেতা, বিক্রেতা কেউ নেই। ভালুক উল্টে পাল্টে নেড়েচেড়ে সব দেখতে লাগল।
কিন্তু চাইলেই কি আর সবসময় সব মেলে? ভালুকটাও শালুক পেল না। মনের দুঃখে ফোঁপাতে ফোঁপাতে ভালুক তার ঘরের পথ ধরল।

দিনকয়েক পরে। পাতাকুড়ুনিরা বনে এসেছে পাতা কুড়োতে। ভালুক সেই শব্দ শুনে ভাবল, যাই, একবার ওদের কাছে। ওরা তো এদিকসেদিক ঘুরে বেড়ায়, যদি কোন সন্ধান দিতে পারে শালুকফুলের। কিন্তু যেই না তাদের কাছাকাছি যাওয়া, অমনি যে যার জড়ো করা পাতাটাতা ফেলে দে দৌড়!
এমনি করে করে চারদিকে নানান কথা রটে গেল ভালুকের সম্পর্কে। ভয়ে আর কেউ বনের দিকে পা-ই বাড়াতে চায় না।
যাই হোক, একদিন এখন সকালে আকাশের মুখ ভার। আর ভালুকের তো মন ভার হয়ে আছেই। মনখারাপ নিয়েই ভালুকটা বেরিয়েছে ইতিউতি ঘুরেফিরে আসতে।
বনের ভেতরটা অন্ধকার জমাট বেঁধে আছে। জঙ্গলের বাইরেও আঁধার ক্রমশঃ আকাশের বুক ফুঁড়ে নেমে আসছে মাটির বুকে। ভালুকটা ঢিমেতালে এগোচ্ছিল। মন তার ভার হয়ে আছে। সামান্য একটা শালুকফুল, তাও সে যোগাড় করতে পারছে না। বনের অন্যান্য প্রাণীরা শুনলে তো তাকে দুয়ো দেবে। যদিও খুব একটা আর জন্তুজানোয়ার আর নেই বললেই চলে। মানুষজন জঙ্গল কেটে সাফ করে দিয়েছে।
গাছপালার আড়াল থেকে বেরিয়ে এবার হাইওয়ের ধার দিয়ে হাঁটতে থাকল সে। অন্ধকার নেমে গেছে, কেউ দেখলে ভালুক বলে আর চিনতেও পারবে না। মনে হবে, কালো কোটপ্যান্ট পরা কোন লোক বুঝিবা ঝুঁকে ঝুঁকে হাঁটছে।
মাঝে মাঝেই হেডলাইটের তীব্র আলো ফেলে ছোটো বড়ো গাড়ি সাঁই সাঁই করে পেরিয়ে যাচ্ছে। আর একদম হঠাৎই ঘটে গেল দুর্ঘটনাটা। একটা লোক আসছিল উল্টোদিক থেকে। আচমকাই একটা ট্রাক পাশ দিয়ে যেতে যেতে মানুশটাকে পুরো ধাক্কা দিয়ে ফেলে চলে গেল।
ভালুক দৌড়ে গেল তাড়াতাড়ি। লোকটা পুরো রক্তে ভিজে গেছে। চোয়াল থেকে, কপাল থেকে চুঁইয়ে চুঁইয়ে রক্ত পড়ছে। অন্ধকারে ভালো দেখা যায় না। নেহাত এতক্ষণে মেঘ কেটে গিয়ে প্রতিপদের জ্যোৎস্না বেরিয়ে পড়েছে, তাই দেখা যাচ্ছে।
ভালুক আর দেরি করল না। মানুষ্টাকে কোলপাঁজা করে তুলে নিল চটপট। পাতিলনগরে ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের রাস্তাটা তার জানা। এই রাস্তা দিয়ে সরাসরি গেলেই।
ভালুক যখন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছল, তখন অনেকটাই রাত। সামান্য যে কিছু লোক ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল, তারা অতো রাতে একটা ভালুককে একটা মানুষকে পাঁজাকোলা করে নিয়ে আসতে দেখে কোনমতে পালিয়ে বাঁচল।
মুহূর্তের মধ্যে স্বাস্থ্যকেন্দ্র মোটামুটি দিনের আলোর মতোই ফরসা। খালি যাদের নড়াচড়ার ক্ষমতা নেই, তারাই শুধুমাত্র বেডের সাথে সিঁটিয়ে শুয়ে থাকল। বাকী রোগীরা কেউ বেডের তলায়, কেউ বাথরুমের ভেতরে, কেউবা আলমারীর পেছনের কোণে যে যার মতো লুকিয়ে বাঁচল। আর রোগীদের সঙ্গীসাথী, হাসপাতালের লোকজন তো আগেই চম্পট দিয়েছিল।
ভালুক অতকিছু খেয়াল করেনি। সে খুব ধীরে ধীরে রোগীকে বিছানায় শুইয়ে দিল। আর সেই সময়েই অপারেশন থিয়েটার থেকে বেরিয়ে ডাক্তার দিদিমণি সেই ঘরে এসে ঢুকলেন। প্রথমটায় তিনিও বোঝেননি। ঘরের কম আলোতে ভালুক বলে ঠাহরও করতে পারেননি। রক্তে ভেসে যাওয়া রোগীকে শোয়াতে দেখে তিনি অবাক, “এ কী! পেশেন্ট পার্টির বাড়ির লোকজন কেন রোগীকে শোয়াবে? নার্স, অ্যাটেন্ড্যান্ট সব গেল কোথায়?”
এক রোগী বিছানার ওপর শুয়ে শুয়ে আতঙ্কে ঠকঠক করে কাঁপছিল। ডাক্তার দিদিমণির কথা শুনে সে হাত বাড়িয়ে ‘ভা-ভা-ভা’ বলে আবার বিছানাতেই এলিয়ে পড়ল। ডাক্তার তাই শুনে তাকালেন পেছনপানে। যা দেখলেন, তাতে তাঁরও আক্কেল গুড়ুম। ঠিক পেছনেই একটা অতিকায় ভালুক। অজ্ঞানই হয়ে যেতেন হয়তো, যদি না শেষ মুহূর্তে ভালুকের চোখে চোখ পড়ত তাঁর। ভারি করুণ আর বাঙ্ময় চোখ দুটি। রক্তে ভেসে যাওয়া রোগীকে সারিয়ে তোলার নীরব কাকুতি তার ছলছল চোখে।
কথা আর না বাড়িয়ে ডাক্তার তাঁর কাজ শুরু করে দিলেন।

সেই দিনের পর থেকে ভালুকও থেকে গেল হাসপাতাল চত্বরে। সবার সাথে ভালোমতো দোস্তি হয়ে গেছে। রাতে ডাক্তার দিদিমণির বাড়ির বারান্দায় শোয়। খাবার দাবারেরও ভাবনা নেই। হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স, অন্যান্য লোকজন যে যখন যা পারে, তার জন্য নিয়ে আসে। আর সেই রক্তে ভেসে যাওয়া রোগী- সে বা তার বাড়ির লোকজনেরাও প্রায়ই আসে তার জন্য এটাওটা নিয়ে। মাঝেসাঝে একান্তইমন খারাপ থাকলে গনপুরের জঙ্গল থেকেই ঘুরে আসে।
অভাব কিছুই নেই, কিন্তু শালুকফুলের চিন্তাটা মাঝেমাঝেই তাকে কুরে কুরে খায়। মাঝেমাঝেই সে নানারকম ইঙ্গিত করে বোঝানোর চেষ্টা করে তার মনোবাসনা। ক্রমশঃ তার হাত নাড়া, পা নাড়া এমন পর্যায়ে চলে গেল যে ব্যাপারটা সবারই নজরে পড়ল।
হাসপাতালের ডাক্তার দিদিমণি বললেন, “ও হয়তো কিছু বলতে চায়। আমরা বুঝে উঠতে পারছি না।”
কথাটা সবারই মনে ধরল। কিন্তু কী বলছে জানা যাবে কিভাবে? ঠিক হল দোভাষী ডাকা হবে। সেইমতো বিজ্ঞাপনও দেওয়া হলো কাগজে। অনেক রকমের দোভাষীই এলো। কেউ জার্মান জানে, কেউ রাশিয়ান শিখেছে, কেউ ফারসীতে পণ্ডিত। কিন্তু ভালুকের ভাষা আর কেউ জানে না। তখন ঠিক হল, হরবোলা ডাকা হবে। হরবোলাও এলো। সে এসে বলল, “আমি তো জন্তুজানোয়ারদের ডাক নকল করতে পারি, তাদের ভাষা তো বুঝতে পারি না।”
অগত্যা সবাই হাল ছেড়ে দিল। ভালুকও মোটামুটি হাল ছেড়েই দিয়েছে, এমন একদিন সকালবেলা এক গাঁয়ের রুগী তার নিজের পুকুরে তোলা শালুকফুল এনে দিয়ে গেল ডাক্তারদিদিমণির মেয়ের হাতে। সে তো মহানন্দে শালুকফুল নিয়ে বাগানে ঘুরতে শুরু করে দিল। ভালুক সেসময় একটু বেরিয়েছিল। ভালুক যখন ফিরল, ডাক্তারদিদিমণির মেয়ে ঘুরছিল বাড়ির বাইরে। আচমকা ভালুকের নজরে পড়ল, তার হাতে একটা শালুকফুল। আর সামলাতে পারল না সে। তড়িঘড়ি তার হাত থেকে ভালুক ফুলটা নিয়ে নাচ শুরু করে দিল। সে কী নাচ! সে কী নাচ!
বাচ্চা মেয়ের চিৎকারে সবাই বেরিয়ে এল। মানুষজন জড়ো হয়ে গেল তাকে ঘিরে। তার নাচের তালে তালে হাততালি দিতে শুরে করে দিল অনেকে।
একজন আবার গানই জুড়ে দিল,
“শালুক হাতে ভালুক নাচো তো দেখি। ভালুক, নাচো তো দেখি। ভালুক, নাচো দেখি।”
ডাক্তারদিদিমণিও বেরিয়ে এসেছেন। বিষয়টা হৃদয়ঙ্গম করলেন তিনিই। বললেন, “দেখেছো, ও আজ কত্তো খুশি! ও মনে হয় শালুকফুলই চাইছিল!”
ভালুক সাথে সাথে ঘাড় কাত করল, “হ্যাঁ, হ্যাঁ।”
আর কী আশ্চর্য! তার কথা সবাই বুঝেও গেল। ছোট মেয়েটিরও এতক্ষণে ফূর্তি লেগে গেছে। সকলে মিলে ভালুককে ঘিরে ধরে গান শুরু করল এবার-

এক যে ছিল ভালুক
নাচত নিয়ে শালুক
নাচতে নাচতে হঠাত সে
পেল একটা তালুক।

তালুক নিয়ে মজা ভারি
বলল ভালুক হেঁকে-
কাল থেকে সব করবি সেবা
যাস না কেউ বেঁকে।

সেবা করলে বর্তে যাবি-
ভালো কেউ না বাসুক,
নাচতে নাচতে করবি গান
ভালুক পেল শালুক!

…………০………

Leave a comment

Check Also

ভুতুম থুম- মৌসুমী পাত্র

পূর্ণিমার চাঁদটা ভেসে আছে বিরাট একটা গোল থালার মতো। একটা শিশুগাছের ডালের কয়েকটা পাতার ছায়া …

 ছেঁড়া রামধনু – মৌসুমী পাত্র

আমার মা বেজায় দুষ্টু হয়েছে আজকাল। একটা কথাও শুনতে চায় না। এই তো পরশুদিন, বললাম, …

chitrogupter-computer-mp

চিত্রগুপ্তের কম্পিউটার- মৌসুমী পাত্র

“যত্ত সব আদ্যিকালের জিনিস নিয়ে কাজকারবার! আর পারা যায় না বাপু!”, নিজের মনেই গজগজ করতে …

শিল্পী- গুঞ্জা

ফুল-পাখি কথা – মৌসুমী পাত্র

সে ছিল এক গভীর বন। আর সেই বনের ঠিক মধ্যিখানে খানিকটা ফাঁকা জায়গায় ছিল এক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *