Home / কবিতা / গুচ্ছ কবিতা- সুদীপ্ত বিশ্বাস

গুচ্ছ কবিতা- সুদীপ্ত বিশ্বাস

কবিতাঃ
আগামী দিনের ধর্ম
– সুদীপ্ত বিশ্বাস
এমন দিনও আসবে যখন কোনও ধর্মই থাকবে না
মানুষ তখন গড-ভগবান কাউকে মনে রাখবে না।
মানুষ হবে মুক্তমনা বুদ্ধি জ্ঞানে দীপ্ত
ধর্ম নামের খুড়োর-কলে হবে না তাই ক্ষিপ্ত।
আগামীতে সেই মানুষই বিশ্বজুড়ে বাঁচবে
তারায়-তারায়, গ্যালাক্সিতে মনের সুখে নাচবে।
স্বপ্নমাখা ডাগর চোখে করবে মানুষ কর্ম
ধর্ম হবে মানবতা,বিবেক হবে ধর্ম।
এমন দিনও আসবে যখন কোনও ধর্মই থাকবে না
ধর্ম নামের কালো চশমা অন্ধ করে রাখবে না।
ধর্ম
– সুদীপ্ত বিশ্বাস
যাকে তুমি সত্য বলে ধর্ম বলে মানো
আসলে তা ধর্ম নয়, আখের গুছানো।
ধর্ম মানে অন্ধকার, বিভেদের বোধ
ধর্ম শুধু হত্যা চায়, চায় প্রতিশোধ।
মৃতেরও ধর্ম আছে বলে ধার্মিকেরা
আসলে কিছুই নয়, মৌলবাদী এরা।
মুছে দাও মৌলবাদ সমাজের থেকে
সন্তানের জন্য যাও মানবতা রেখে…
ধর্মের বিষ
– সুদীপ্ত বিশ্বাস
ধর্ম ব্রুণোকে পুড়িয়ে মেরেছে, গ্যালিলিও ছিল বন্দি
ধর্মের নামে কে করে ব্যবসা, কারা আঁটে এত ফন্দি?
ওরা চিরকাল আখের গুছিয়ে অন্ধ বানিয়ে রাখে
রক্তের স্রোতে দুহাত রাঙায়, ধর্ম নামের ফাঁকে।
ধর্মের নামে নরবলি দেয়,সতীকে পুড়িয়ে মারে
ধর্মের নামে দেশকে পুড়িয়ে ভষ্ম বানিয়ে ছাড়ে।
ধর্মে বালক ব্রেন ওয়াশড হয়ে টুইন টাওয়ার ভাঙ্গে
শুভবুদ্ধির নিরীহ রক্তে ধর্মের হাত রাঙে।
কাশ্মীরি যত পন্ডিত ছিল সব হল ঘরছাড়া
কি পাপ তাদের?কি দোষ তাদের?জবাবটা দেবে কারা?
ধর্মের নামে হলোকাস্ট হয়, ধর্মে বাধায় যুদ্ধ
ধর্মের নামে মুনাফা কামায় আল্লা-ঠাকুর-বুদ্ধ।
ধর্মের নামে অন্ধ মানুষে মানুষকে মেরে হাসে
লাথি মারো ওই ধর্ম নামের অন্ধ অবিশ্বাসে।
ধর্মের বেসাতি
– সুদীপ্ত বিশ্বাস
কতক্ষণ ঘুমিয়েছি মনে নেই।
কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম, তাও মনে নেই।
আড়মোড়া ভেঙ্গে চোখ খুলতেই দেখি
একটা মাঝবয়েসী লোক এসে বলল,
‘ধর্ম নেবে ভাই, ধর্ম!’
আমি ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকি।
সে বলল,’আমার ধর্ম সবার চেয়ে সেরা,
তোমাকে ডাইরেক্ট প্যারাডাইসে নিয়ে যাবে।’
প্যারাডাইসের লোভে যেই তার ধর্ম নিতে হাতটা বাড়িয়েছি, ওমনি হঠাৎ আর একটা বেঁটেখাটো লোক হই হই করে এসে পড়ল।
সে বলল, ‘আরে ছোঃ!ওরটা আবার ধর্ম নাকি!আমার ধর্ম সবচেয়ে প্রাচীন, চকচকে সোনার মত দেখতে।আর যে আমার ধর্ম নেয়, সেও সোনা হয়ে যায়।’একটু আগ্রহী হয়ে যেই তার ধর্ম দেখতে চেয়েছি,ওমনি হঠাৎ একটা ষণ্ডামার্কা লোক বনবন করে তলোয়ার ঘোরাতে ঘোরাতে চলে এল।সে বলল, ‘খবরদার! আমার ধর্মই নিতে হবে।অন্য কারও ধর্ম নিলে একদম ঘ্যাচাং-ফুঁ করে দেব।’
আমি ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে আছি।
ধর্ম এখন
– সুদীপ্ত বিশ্বাস
ধর্মে রাখত ধারণ করে, ধর্মে  দিত শিক্ষা
ধর্ম এখন বদলে গিয়ে অস্ত্রে দিচ্ছে দীক্ষা!
ধর্মে এখন আগুন জ্বালে, ধর্মে পোড়ায় দেশ
ধর্মে শেখায় সন্ত্রাসবাদ, ছড়ায় হিংসা-দ্বেষ।
ছেলে-বুড়ো, পুরুষ-নারী সবাই পড়ে ফাঁদে
ধর্মে মানুষ ঘর ছাড়া হয়,সব হারিয়ে কাঁদে।
ধর্মে এখন রক্তচোষে, ধর্মে করায় খুন
রহিম রামের কাটা ঘায়ে ধর্মে ছেটায় নুন।
ধর্মে এখন অস্ত্র শানায়, ধর্মে শেখায় যুদ্ধ
ধর্মে এখন রণং দেহী আল্লা- হরি -বুদ্ধ!
🎸🎸🎸🎸🎸🎸🎸🎸🎸🎸🎸🎸🎸🎸

Leave a comment

Check Also

মৃত্যুর কবিতারা- সুদীপ্ত বিশ্বাস

১ লাশ কাটা ঘর – সুদীপ্ত বিশ্বাস একদিন আমার বদলে বিছানায় শুয়ে থাকবে আমার লাশ। …

শিল্পী- সোমক সেনগুপ্ত/ আপডেট

আপডেট – যশোবন্ত্ বসু

স্মৃতিমেদুরতা বিষয়ে বলতে গেলে সেই লোডশেডিংবিধৃত সন্ধেগুলির কথা বলতে হয় সুলতানা রিজিয়া ! হৃদমাঝারের মফস্‌সলি …

শিল্পী- যামিনী খাঁ/ দূরবীন

দূরবীন – চন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়

  এ এক সময় ভ্রমণ, পর্যটকের চোখে। ঠিক যেন পুরোনো স্থাপত্যের প্রাঙ্গনে গ্রামীণ ভীড়ের রীত …

পথিক – সন্দীপ কুমার ঘোষ

  দুর্গম পথের পথিক তুমি রক্তিম আবাহিকা, অজয় তোমার মনের ভূমি, হৃদমাঝারে নভৌকা, বহুরূপী আজই …