Home / প্রবন্ধ / পাবলো নেরুদা : জীবন ও কবিতার সংরাগ – রঞ্জন চক্রবর্ত্তী

পাবলো নেরুদা : জীবন ও কবিতার সংরাগ – রঞ্জন চক্রবর্ত্তী

pablo neruda
Pablo Neruda/courtsey- google

।। এক।।

দক্ষিণ আমেরিকার তিনজন অসীম প্রতিভাশালী কবি হলেন সোর জুয়ানা ইনেস ডি লা ক্রুজ, রুবেন দারিও এবং পাবলো নেরুদা। বস্তুত রুবেন দারিও-র সঙ্গে একযোগে যদি কোনো লাতিন আমেরিকান কবির নাম উচ্চারিত হয় তাহলে তা পাবলো নেরুদা। নেরুদার কবিতা আলোচনা করতে গেলে প্রথমেই প্রশ্ন ওঠে – তাঁর রচনাশৈলী কী ধরনের? কোন্ সেই বিশেষ বৈশিষ্ট্য যা দিয়ে আমরা তাঁর কবিতাকে চিনে নেব? তিনি নিজেই একদা বলেছিলেন – “One by one, I have been leaving my books behind me, substituting, reconstructing form and meaning each time.” আসলে তাঁর কবিতায় পাওয়া যায় নানা শৈলী, শোনা যায় নানা স্বর। কবিজীবনের সায়াহ্ন পর্যন্ত তিনি বার-বার কাব্যিক ধরন বদলেছেন, নিজের সৃষ্ট ঐতিহ্যের বিরুদ্ধে চলে গিয়ে আবার নতুন করে ঐতিহ্য নির্মাণ করেছেন। তাঁর রচনা বিংশ শতাব্দীর স্পেনীয়-আমেরিকান কবিতার গুরুত্বপূর্ণ বিকাশের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আছে। বহুমুখী কবিপ্রতিভা এবং কাব্যশৈলী পরিবর্তনের পরম্পরার বিচারে তাঁকে কবিতা-জগতের পিকাসো বলা যেতে পারে। তাঁর কাব্যসম্ভার এত বৈচিত্র্যপূর্ণ যে তাঁকে একমুখী কোনো তকমা দিয়ে বিচার করা যায় না।

জনৈক রেল শ্রমিকের সন্তান নেফতালি রিকার্তো রেইয়েস বাসোয়ালতো জন্মেছিলেন ১৯০৪ সালের ১২ জুলাই, চিলির পাররাল-এ। তিনি দক্ষিণ চিলির তেমুকো গ্রামের পরিবেশে বড় হয়ে উঠেছিলেন। ১৯২০ সাল নাগাদ তিনি চেক্ কবি জান নেরুদা-র পদবী নিয়ে পাবলো নেরুদা ছদ্মনাম গ্রহণ করেন। চিলি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তিনি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কাজকর্ম করলেও সাহিত্যচর্চার নেশা কাঁকে পেয়ে বসেছিল। তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ অসমাপ্ত থেকে যায়, বাবার সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটে এবং তিনি চরম অর্থকষ্টের মধ্যে পড়েন। চিলির নোবেলজয়ী কবি গ্যাব্রিয়েলা মিস্ত্রাল তাঁকে সাহিত্যপাঠে অনুপ্রাণিত করতেন। তাঁরই চেষ্টায় ১৯২৭ সালে নেরুদা রেঙ্গুনে কনসাল পদে নিযুক্ত হন। কিন্তু রেঙ্গুনে বাসকালীন আর্থিক অনটন, প্রেমিকার সঙ্গে বিচ্ছেদ, বিবাহে প্রেমহীনতা ইত্যাদি কারণে তিনি বিষণ্ণ বোধ করতেন। ১৯৩২ সালে তিনি স্বদেশে ফিরলেন এবং আর্জেন্টিনায় কনসাল নিযুক্ত হলেন। রাজধানী বুয়েনস এয়ারেস শহরে তিনি হোর্হে লুই বোর্হেস-সহ অনেক বিদগ্ধ মানুষের সংস্পর্শে আসেন।

১৯৩৩-এ বুয়েনস এয়ারেস-এ থাকার সময় নেরুদার সঙ্গে কবি ফেদেরিকো গার্সিয়া লোরকার পরিচয় ও বন্ধুত্ব হয়। পরের বছর তিনি যখন স্পেনে বদলী হয়ে আসেন তখন সেই বন্ধুত্ব গাঢ়তর হয়। তখন স্পেনে রিপাবলিকান সরকারের আমল। সে দেশের প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবীরা তাঁকে সাদরে গ্রহণ করেন। ‘২৭ প্রজন্মে’র কবি ও বুদ্ধিজীবীরা (বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ভিসেন্তে আলেইকসান্দ্রে এবং রাফায়েল আলবের্তি) তাঁর প্রতিভায় মুগ্ধ হন। প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবী মানোয়েল আলতোলাগিররে তাঁকে ‘সবুজ ঘোড়া’ (‘Caballo Verde’) পত্রিকাটি সম্পাদনার দায়িত্ব দেন। ১৯৩৪-৩৫ নাগাদ বার্সিলোনা ও মাদ্রিদে থাকাকালীন সময়টা নেরুদার কবিজীবনের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় অধ্যায়। তিনি সেই সময়ের স্পেনের অধিকাংশ কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী ও বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে পরিচিত হয়ে যেন নিজের সৃজনশক্তিকে পুনরাবিষ্কার করলেন। তাঁর স্মৃতিকথায় এঁদের প্রতি অকুন্ঠ প্রশংসা আছে। এই সময়েই ‘Residencia en la tierra’-র (‘মাটির আবাসন’) বিখ্যাত কবিতাগুলি লেখা হয়েছিল। স্পেনের গৃহযুদ্ধের সৈনিকরা নিজেরা কাগজ বানিয়ে কিছু কবিতা ছাপিয়েছিল। সেই সব কবিতা হাতে হাতে ঘুরত, ট্রেঞ্চে পড়া হত।

নেরুদা স্পেনে এসে সবই পেলেন – ‘মাটির আবাসন’-এর দ্বিতীয় মুদ্রণ প্রকাশিত হল, অর্থলাভ এবং বন্ধুসঙ্গও হল। কিন্তু স্পেনের এই সুখী জীবন বেশিদিন স্থায়ী হল না। ১৯৩৬ সালে ফ্যাসিস্ত ও গণতন্ত্রীদের মধ্যে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। যুদ্ধের শুরুতেই পুলিশ হত্যা করল কবি-নাট্যকার লোরকাকে। ঘটনার আকস্মিকতায় বিমূঢ় নেরুদা সাময়িক বেদনা কাটিয়ে উঠে হাতে তুলে নিলেন কলম। তিনি রিপাবলিকানদের সমর্থনে নিজের কবিতায় পৃথিবীর সব পাঠকদের উদ্দেশ্যে আহ্বান জানালেন। তাঁর কলম থেকে বেরিয়ে এল এক অনবদ্য রচনা – ‘হৃদয়ে স্পেন’ (‘Espana en el corazon’)। স্পেনের গৃহযুদ্ধ নেরুদাকে এক স্পষ্ট রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাসী করে তুলেছিল। অনেক বছর পরে ১৯৭১ সালে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন – ‘আমার জীবনের ভিত্তিমূলে এক প্রচণ্ড আলোড়ন ছিল সেই সময়ের স্পেন।’ তাঁর স্মৃতিকথার ‘একটা পথ বেছে নিয়েছিলাম’ (‘Elegi un camino’) অধ্যায়ে তিনি বলেছেন কেন কম্যুনিষ্ট পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন। এর পিছনে নানা কারণ থাকলেও তিনি স্পেনের গৃহযুদ্ধকালীন কয়েকটি ঘটনার উল্লেখ করে বলেছেন সেই উত্তাল সময়ে একমাত্র কম্যুনিষ্টরাই সংঘবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করে যাচ্ছিল এবং তাদের নৈতিক শক্তিও ছিল ফ্যাসিস্ট বাহিনীর সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার। তাই কম্যুনিষ্টদের পথ অনুসরণ করার জন্য তিনি জীবনে কখনই অনুতপ্ত হননি।

গৃহযুদ্ধে দেশত্যাগী স্পেনীয়দের অভিবাসনের দায়িত্ব নিয়ে পাবলো নেরুদা চিলিতে ফিরে এলেন। ১৯৪০-এ তিনি মেক্সিকোর রাষ্ট্রদূত হন। ১৯৪৩-এ তিনি পেরুর ইনকা সাম্রাজ্যের ধ্বংসাবশেষ মাচ্চু পিচ্চু দেখতে যান এবং তাঁর কাব্যজগতে এক বিরাট পরিবর্তন ঘটে যায়। পেরুতে অবস্থিত আন্দিজ পর্বতের উচ্চতায় প্রাচীন নির্মাণ দেখে তিনি অভিভূত হন। লাতিন আমেরিকার প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন দেখে গর্বিত হয়ে তিনি উপহার দিলেন একটি অসাধারণ কাব্য – ‘Alturas de Macchu Picchu’ (‘মাচ্চু পিচ্চুর উচ্চতা’)। এটি তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ ‘Canto general’-এর (১৯৫০) অন্তর্ভুক্ত। এই কবিতায় Yo/‘আমি’ কথক হয়ে ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে লাতিন আমেরিকান মানুষের ঐতিহ্য, গৌরব, শ্রম, শোষণ, সংগ্রাম ও মুক্তির কথা বর্ণনা করে। বস্তুত এই কাব্যগ্রন্থটি রুক্ষ্মতার সঙ্গে কোমলতার মিশ্রণে অননুকরণীয় ভাষার রচিত এক মহাকাব্য। প্রসঙ্গত তিনি লিখেছেন – ‘Me senti chileno, peruano, americano.’ অর্থাৎ – ‘নিজেকে মনে হল আমি চিলির, আমি পেরুর, আমি আমেরিকার।’

নেরুদার জীবনের কয়েকটি বহিরঙ্গিক ঘটনা সংক্ষেপে উল্লেখ করছি। ১৯৪৮-এ তিনি চিলির সেনেট থেকে বিচ্যুত হন এবং আত্মগোপন করেন। তিনি অশ্বারোহণে আন্ডিজ অতিক্রম করেন এবং দক্ষিণ আমেরিকার নানা স্থানে পরিভ্রমণ করেন। এর পর পারীর শান্তি কংগ্রেসে তাঁর চকিত আত্মপ্রকাশ ঘটে। ১৯৫২ থেকে তিনি চিলিতে বসবাস করতে থাকেন। ১৯৬৯-এ তিনি চিলির রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হন, কিন্তু সালভাদোর আইয়েন্দেকে সুযোগ দিয়ে সরে আসেন। ১৯৭১ সালে তিনি ফরাসী দেশে রাষ্ট্রদূত হন এবং ওই বছরই নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৭৩ সালে অগাস্তো পিনোশের নেতৃত্বে চিলিতে মিলিটারি অভ্যুথ্থানের ফলে তিনি যে দেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন তা ধূলিসাৎ হয়। সালভাদোর আইয়েন্দে হত্যার বার দিন পরে ২৩ সেপ্টেম্বর সান্তিয়াগোতে পাবলো নেরুদার মৃত্যু হয়। তবে তাঁর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিয়ে বিতর্ক আছে। মৃত্যুর কয়েক ঘন্টা পরেই ফ্যাসিস্ট দস্যুরা ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তাঁর বাড়ির উপর। তাঁর বাড়িতে চলেছিল তাদের তাণ্ডবলীলা।

।। দুই।।

যৌবনের প্রারম্ভে নেরুদা যে সব কবিতা রচনা করেছেন সেখানে তিনি কাব্যিক ‘Yo’/‘আমি’, প্রকৃতি এবং নারীশরীরে নিমগ্ন। এই ‘আমি’ হল খাঁটি লাতিন আমেরিকান যৌবন – উদ্দাম ও বিষণ্ণ। তাঁর প্রথম কবিতার বই ‘Crepusculario’-এ (‘গোধূলির সময়’, ১৯২৩) ব্যক্তিকতার ব্যাপকতা এবং আগামী দিনের বড় কবি হবার প্রতিশ্রুতি ছিল। এই গ্রন্থটির মূল সুর প্রেম এবং যন্ত্রণা, পাশাপাশি তা পূর্বসূরী কবিদের রোমান্টিকতার প্রভাবও বহন করে। এর পর ‘Vinte poemas de amor y una cancion desesperada’ (‘কুড়িটি প্রেমের কবিতা এবং একটি হতাশার গান’ ১৯২৪) প্রকাশিত হলে তিনি প্রেমের কবি হিসেবে সর্বত্র স্বীকৃত পেলেন। এর অধিকাংশ কবিতায় যৌবনের ইন্দ্রিয়ানুভূতি, নারীশরীর নিয়ে উচ্ছ্বাস, মাটির সঙ্গে নারীর একাত্মতা ইত্যাদির সমন্বয়ে রোমান্টিক ভাবনার প্রকাশ ঘটেছে। তারই সঙ্গে এই কাব্যগ্রন্থের কবিতাগুলি বিষাদ ঘেরা শরীরী প্রেম এবং পরাবাস্তব বর্ণালীতে পরিপূর্ণ। কাব্যিক ‘আমি’ প্রেম সংক্রান্ত প্রশ্নে বিষণ্ণতায় আচ্ছন্ন বোধ করে। তার ইন্দ্রিয়ানুভূতি এবং যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যৌবনের আকুতি প্রকাশ পায়। বেদনামথিত ব্যক্তি ‘আমি’ যন্ত্রণায় একা, নিঃসঙ্গ। প্রকৃতি ও নারীর মধ্যে সে প্রতীকী রূপকল্প আবিষ্কার করে। ১৯২৬ সালে প্রকাশিত হয় ‘Tentativa del hombre infinito’ (‘অসীম এক মানুষের প্রয়াস’), যেখানে জীবন যন্ত্রণার প্রকাশ একেবারে ব্যক্তিগত। এটি কবির সংবেদনশীলতায় অধিকতর মাত্রা যোগ করে।

১৯৩৩-এ প্রকাশিত ‘El hondero entusiasta’ (‘অতি উদ্যমী পুরুষ’) কাব্যগ্রন্থেও সেই যৌবনের ছবি, যৌবনের যন্ত্রণা। ওই বছরেই প্রকাশিত ‘Residencien en la tierra’-র (‘মাটির আবাসন’ বা ‘মর্ত্যের পৃথিবী’) কবিতাগুলি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এগুলি ১৯২৫ থেকে ১৯৩১-এর মধ্যে রচিত এবং  তিনটি খণ্ডে গ্রন্থিত হয়েছিল। ১৯৩৩ সালের এই কাব্যগ্রন্থটি যেন পৃথিবীর যাবতীয় দুঃখ ও বেদনার মহাকাব্য। বিভিন্ন দেশে কনসাল-এর চাকরি জীবনের নিঃসঙ্গতা এবং পার্থিব অভাব অনটন থেকে নানবিধ মানসিক টানাপোড়েনের অভিব্যক্তির প্রকাশ ঘটেছে এই সময়ের কবিতায়। ব্যক্তিগত হতাশায় নিমজ্জিত কবির চোখে কেবলই ভেসে ওঠে বেদনাসিক্ত মাটি যেখানে চারদিকে শুধু অবসাদ, দারিদ্র্য ও মৃত্যু। তাঁর কবিতার শিরোনাম ‘আমার বাড়িতে অসুখ’, ‘পরিবারে বিষাদ’, ‘একটি ভোরের দুর্বলতা’ ইত্যাদি। যুক্তিহীন মারণযজ্ঞের সামনে অসহায় কবি লেখেন ‘El reloj cae en el mar’ (‘আমার ঘড়িটা হারিয়ে গেছে’), অর্থাৎ সময়ের মৃত্যু ঘটে গেছে। পরাবাস্তব শৈলীতে অবচেতনের বিশৃঙ্খল চিন্তাভাবনার প্রতিফলন ঘটেছে কবিতায়। তবে পরাবাস্তবতা এবং হতাশার কুয়াশার মধ্যে শুরু হলেও শেষে ব্যক্তিকতা রূপান্তরিত হয়েছে বৈশ্বিকতায়। ১৯৩৫ সালে এই কাব্যগ্রন্থের দ্বিতীয় অধ্যায় প্রকাশিত হয়, যেখানে বাস্তব জগতের অসংগতি আরও সূক্ষ্মভাবে উচ্চারিত হয়। ১৯৪৭ সালে প্রকাশিত হয় ‘Tercera residencia’ (‘তৃতীয় আবাসন’)। সামাজিক বিশৃঙ্খলা এবং মানুষের যন্ত্রণার সঙ্গে কবির একাত্মতা এখানে প্রতিফলিত হয়েছে। অবাঞ্ছিত যুদ্ধ যে ব্যাপক অশান্তি নিয়ে আসে কবিতায় তার প্রতিফলন ঘটেছে। এই সময় থেকেই কবি পাবলো নেরুদা রাজনৈতিক মতাদর্শের দিক থেকে একটি সুনির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গী গ্রহণ করতে থাকেন।

স্পেনের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নেরুদা বিভিন্ন দেশে ঘুরেছেন এবং বক্তৃতা দিয়েছেন। ‘Espana en el corazon’ (‘Spain in my Heart’ বা ‘স্পেন আমার হৃদয়ে’, ১৯৩৭) কাব্যের বিষয় হিসেবে এসেছে রাজনীতি, যার ছাপ রয়েছে প্রথম কবিতাটি থেকেই। এর ষষ্ঠ কবিতাটির মঙ্গলাচরণ চট্টোপাধ্যায়-কৃত অনুবাদ উদ্ধৃত করছি–

“তবু প্রতিটি মৃত অট্টালিকা থেকে ফিনকি দেয় জ্বলন্ত ধাতু

ফিনকি দেয় ফুলের পরিবর্তে,

স্পেনের প্রতিটি গহ্বর থেকে

উৎসারিত স্পেন,

প্রতিটি নিহত শিশু জন্ম দিচ্ছে একেকটি শ্যেনদৃষ্টি বন্দুকের,

প্রতিটি পাপ থেকে জন্মাচ্ছে বুলেট

একদিন না একদিন যা খুঁজে পাবে একটা হৃদপিণ্ডর অব্যর্থ লক্ষ্যবস্তু।”

‘Residencien en la tierra’-র (‘মর্ত্যের পৃথিবী’) পঞ্চম পর্বের দুটি কবিতা স্টালিনগ্রাদ বিষয়ক। নেরুদা মেক্সিকো থাকাকালীন নাজিদের দ্বারা স্টলিনগ্রাদ অবরুদ্ধ হওয়ার সময় এগুলি লেখা হয়। ‘স্টালিনগ্রাদের জন্য নতুন প্রেমের গান’ কবিতায় তিনি রাশিয়ার সাম্যবাদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল মানুষকে উত্তেজিত করে তুলতে চেয়েছেন। তাঁর কবিতায় ধ্বনিত হয়েছে প্রতিরোধের আহ্বান –

“আর সমগ্র স্পেনের মধ্য থেকে এটা আবার উঠে আসে

আর স্পেনীয়রা জিজ্ঞেস করে,

ফায়ারিং স্কোয়াডের দেওয়ালের পর

স্টালিনগ্রাদ কি টিকে থাকবে”

কবিতায় রাজনীতি প্রবেশ করে অনর্থ বাধিয়েছে এই অভিযোগ নিয়ে সোরগোল পড়ে যায়। কিন্তু নেরুদা এ সব নিয়ে মোটেই চিন্তিত হননি, বরং তিনি স্বেচ্ছায় রাজনৈতিক কবি যোদ্ধা হতে চেয়েছেন।

নেরুদার ‘Canto general’ (‘সাধারণ গীত’) প্রকাশিত হয় ১৯৫০ সালে, মেক্সিকো থেকে। এটি বিংশ শতাব্দীর সুউচ্চ কাব্যশিখরগুলির মধ্যে একটি। এর সঙ্গের ছবিগুলি এঁকেছিলেন দুই বামপন্থী মেক্সিকান শিল্পী – দিয়েগো রিভেরা এবং দাভিদ আলফারো সিকোইরোস। এই কাব্যগ্রন্থের বেশির ভাগ কবিতাই ১৯৪৮-৪৯ সালে আত্মগোপনের কালে লেখা। তখন নেরুদার বয়স ছেচল্লিশ, কবি হিসেবে আন্তর্জাতিক খ্যাতি পেয়েছেন। জীবনের যাত্রাপথের মধ্যপর্বে এসে তাঁর ব্যক্তিক আর্তি গৌণ হয়ে গেছে, তিনি বিশ্বদৃষ্টি প্রসারিত করেছেন। এই কাব্যের অধ্যায়ের সংখ্যা ১৫, আর প্রতিটি অধ্যায়ে আছে কিছু কবিতা, সর্বমোট ২৫২টি কবিতা। এই কাব্যটি নেরুদার কবিজীবনের ইতিহাসে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ঐতিহাসিক দৃষ্টিতে মাটি ও মানুষ নিয়ে এটি একটি মহাকাব্য। তবে কবি ইতিহাস লেখেন না, তাঁর চোখে লাতিন আমেরিকার উথ্থান ও পতনের যন্ত্রণা, অতীত দিনের গৌরব এবং সমকালীন মানুষের বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম কাব্যিক ভাষায় এক ইতিহাস হয়ে ওঠে। সমাজতান্ত্রিক বাস্তবতায় বিশ্বাসী কবি এই সব কবিতায় পুঁজিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদকে আক্রমণ করেছেন, কারণ শোষণই মুখ্যত সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশার কারণ। লাতিন আমেরিকার সব মানুষের প্রতি তাঁর আহ্বান ধ্বনিত হয়েছে। এর নবম পর্বের (সুভাষ মুখোপাধ্যায় কৃত অনুবাদ) এক জায়গায় তিনি বলেছেন –

‘আমি জনসাধারণ, অগণন জনসাধারণ,

স্তব্ধতাকে পাড়ি দেওয়ার আর

অন্ধকারে অঙ্কুর জাগানোর

সুস্পষ্ট ক্ষমতা ধরে আমার কন্ঠস্বর।’

প্রসঙ্গত জানাই নেরুদার কাব্যগ্রন্থগুলির মধ্যে অন্তত দু’টির ক্ষেত্রে দেখা যায় অংশবিশেষ পৃথক নামে প্রকাশিত হয়েছে এবং পাঠকমহলে খ্যাতি পেয়েছে। যেমন ‘রেসিডেন্সিয়া এন লা তিয়েররা’ বইটির চতুর্থ অংশ ‘Spain, in my heart’ নামে প্রকাশিত হয়েছে। আবার ‘Canto general’ বইটির দ্বিতীয় অংশ ‘The Hights of Macchu Picchu’ নামে এবং নবম অংশ ‘Let the Rail Splitter Awoke’ নামে প্রকাশিত হয়েছে। ‘Canto general’ যখন বেরোয় নেরুদা তখন পলাতক। এর পর পারী আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলনে তাঁর আতর্কিত আত্মপ্রকাশ এবং কবিতা পাঠ (‘বলিভারের জন্য গান’) সারা পৃথিবীতে হৈ চৈ ফেলে দেয়। চিলিতে সরকার বদল হলে তাঁর উপর থেকে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা তুলে নেওয়া হয় এবং ১৯৫২ সালের ১২ আগষ্ট তিনি বিজয়ী বীরের মতো সান্তিয়াগোতে প্রবেশ করেন।

নেরুদার ‘Los versos del capitan’ (‘অধিনায়কের কাব্য’, ১৯৫২) গ্রন্থের কবিতাগুলিতে অন্তরঙ্গ আলাপচারিতা, জীবন-যন্ত্রণা এবং ইন্দ্রিয়ানুভূতির প্রকাশ ঘটেছে। এর পরের ‘Les uvas y el viento’ (‘আঙ্গুর এবং ঝড়’, ১৯৫৪) কাব্যগ্রন্থের বর্ণনামূলক কবিতায় তাঁর রাজনৈতিক মতাদর্শের সোচ্চার প্রকাশ ঘটে। ১৯৫৪ থেকে ১৯৫৭ পর্যন্ত তিনি বেশ কিছু ওড লেখেন। এগুলি প্রকাশিত হয় ‘Odas elementales’ (‘প্রাথমিক ওড’), ‘Nuevas odas elementales’ (‘নতুন প্রাথমিক ওড’) এবং ‘Tercer libro de las odas’ (‘ওডের তৃতীয় বই’) কাব্যগ্রন্থে। অতি তুচ্ছ জিনিস থেকে শুরু করে মানুষের মহত্ব ও সংবেদনশীলতা কাব্যিক ভাষার মাধ্যমে অনবদ্য সৃষ্টি হয়ে উঠেছে। শব্দের জাদুতে তিনি কবিতার দৃশ্যগত ও সাংগীতিক রূপ ফুটিয়ে তুলেছেন। তিনি আবিষ্কার করেছেন যে অতি তুচ্ছ জিনিসের মধ্যেও মানুষের বাঁচার রসদ আছে এবং তা থেকে সে আনন্দ লাভ করতে পারে।  ‘Estravagario’ (‘ভবঘুরে’, ১৯৫৮) কবির একান্ত বিষণ্ণ চিন্তার ফসল। ‘Cien sonetos de amor’ (‘প্রেমের একশোটি সনেট’, ১৯৫৯) হল আত্মজৈবনিক ভাষ্য, যা কবির সংবেদনশীল অস্তিত্বের অন্তরঙ্গ অনুভবের প্রকাশ।

পাবলো নেরুদার কবিতার এক বিশাল অংশ জুড়ে থাকে সমাজ ও রাজনীতি। তিনি মনে করেন – ‘porque to puedo ser sin ser de to dos’ (‘কারণ সবাইকে বাদ দিয়ে আমার কোনো সত্তা থাকতে পারে না’)। তাই ১৯৬০ সালে প্রকাশিত  ‘Cancion de gesta’ (‘বীরত্বের গান’) কাব্যগ্রন্থে এবং ১৯৬৬ সালে প্রকাশিত ‘Fulgor Y muerte de Jouquin Murieta’ (‘হোয়াকিন মুরিয়েতার মহিমা ও মৃত্যু’) নাটকে আমরা পাই নির্যাতিত মানুষের কথা। ‘বীরত্বের গান’ কাব্যগ্রন্থ নেরুদার রাজনৈতিক মতাদর্শের সৃষ্টি। স্পেনের গৃহযুদ্ধ তাঁকে এক বিশ্ববীক্ষা দেয় এবং অনুপ্রাণিত করে। কিউবার বিপ্লব তাঁর এক অসাধারণ অনুভব, যা প্রকাশ পেয়েছে ‘তৃতীয় আবাসন’-এ। বিপ্লবের সাফল্যে উদ্বুদ্ধ কবি মানুষের অসীম ক্ষমতায় আস্থাবান হয়ে উঠেছেন। একমাত্র মানুষই এই পৃথিবীকে বদলে দিতে পারে এই বিশ্বাসে উপনীত হয়ে তিনি প্রচণ্ড আশাবাদী হয়ে পড়েন।

১৯৬১ সালে রচিত ‘Poesias : Les piedras de Chile’ (‘চিলির পাথর’) কবিকে জন্মভূমির মাটিতে নিয়ে যায়। সেখানে তিনি যা কিছু চিরস্থায়ী এবং কালজয়ী তার মধ্যে জীবনের প্রবাহ দেখে আনন্দিত হন। দেশের নিসর্গ এবং বয়ঃসন্ধিক্ষণের স্মৃতির ভাণ্ডার উজাড় করে তিনি লেখেন আত্মজৈবনিক কবিতার সংকলন ‘Memorial de Isla Negra’ (‘ইসলা নেগ্রার স্মৃতিকথা’, ১৯৬৪)। চিলির ইসলা নেগ্রা দ্বীপে তিনি দীর্ঘদিন বাস করেছেন। এই গ্রন্থের শৈশবের স্মৃতি নিয়ে লেখা কবিতায় চিলির গ্রাম-শহর, প্রকৃতি ও মানুষের চিত্র পাওয়া যায়। ‘Fin del mundo’ (‘পৃথিবীর শেষ’, ১৯৬৯), ‘La espada encendida’ (‘জ্বলন্ত তরোয়াল’, ১৯৭০) কাব্যগ্রন্থগুলি কবির শেষ বয়সের রচনা। বাইবেল অনুপ্রাণিত কবি ‘পৃথিবীর শেষ’-এর কবিতাগুলিতে শেষের ভয়াবহ দিনের কথা বলেন। ভুয়োদর্শী কবি যেন দেখতে পান নতুন শতাব্দীতে পৃথিবী যুদ্ধে ধ্বংস হয়ে যাবে। তাঁর দিব্যদৃষ্টিতে ভেসে ওঠে প্রযুক্তিবিদ্যার প্রাচুর্য, মানুষের হতাশা, সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও রক্তপাতের দৃশ্য। ‘জ্বলন্ত তরোয়াল’-এ কবি যেন ভবিষ্যদ্রষ্টা, পৃথিবীর অনিবার্য ধ্বংসের পরে মৃত্যুর মধ্য দিয়ে তিনি মানুষের পুনর্জীবন লাভের আশা ব্যক্ত করেন। ‘Confieso que he vivido’ (‘বেঁচেছি কবুল করি’, ১৯৭৪) এবং ‘Para nacre he nacido’ (‘জন্মের জন্যই জন্মেছি’, ১৯৭৭) গ্রন্থদু’টি আত্মজীবনীমূলক। এগুলি তাঁর মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয়।

।। তিন।।

পাবলো নেরুদা ১৯২৮, ১৯৫০ এবং ১৯৫৭ সালে ভারতে এসেছিলেন। তিনি কলকাতায়ও এসেছেন, ১৯৫৭ সালে চিন্মোহন সেহানবীশের সঙ্গে বিষ্ণু দে-র বাড়ি গিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথ একসময়ে তাঁর প্রিয় কবি ছিলেন। ‘কুড়িটি প্রেমের কবিতা ও একটি হতাশার গান’ বইটিতে রবীন্দ্রনাথের ‘তুমি সন্ধ্যার মেঘমালা’ (মানস প্রতিমা) কবিতাটির একটি অনুবাদ মৌলিক কবিতার মধ্যে ছিল। (এ নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে প্লেগিয়ারিজমের অভিযোগ উঠেছিল এবং চিলিতে কিছু সমালোচনাও হয়েছিল। কিন্তু মূল গ্রন্থে কবি R. Tagore-এর নাম উল্লেখ করেছেন।)। ১৯২৭ সালে তিনি রেঙ্গুনে রবীন্দ্রনাথকে দেখেন। সেই রবীন্দ্রদর্শনের কথা তিনি সবিস্তারে লিখেওছেন (Passions and Impressions – Pablo Neruda দ্রষ্টব্য)। কবি মঙ্গলাচরণ বন্দোপাধ্যায় ‘ধর্ষিত দেশ’, ‘প্রত্যাবর্তন ও স্তোত্র’ প্রভৃতি বেশ কয়েকটি কবিতার অনুবাদ করেছিলেন। নেরুদা নোবেল পুরস্কার পাবার পর মঙ্গলাচরণের ‘পাবলো নেরুদার কবিতা’ (১৯৭২) বেরোয়। বিষ্ণু দে-র করা সাতটি কবিতার অনুবাদ প্রকাশিত হয় ‘সাহিত্য পত্র’ পত্রিকায় (১৩৫৮, আষাঢ় সংখ্যা)। এগুলি হল – ‘প্রচ্ছন্ন স্বদেশ’, ‘কাব্যতত্ত্ব’, ‘বলিভারের গান’, ‘স্তোত্র ও প্রত্যাবর্তন’, ‘চিলির সমুদ্র’, ‘নতুন নিশানে পুনর্মিলন’ ও ‘স্পেনের কারায় নিহত’। আরও পরে মণীশ ঘটকের অনুবাদগুলি পুস্তকাকারে প্রকাশিত হয়। সুভাষ মুখোপাধ্যায় তাঁর ‘পাবলো নেরুদার কবিতা’ (১৩৮০ বঙ্গাব্দ) ও ‘পাবলো নেরুদার আরো কবিতা’ (১৩৮৭ বঙ্গাব্দ) বইদু’টির মাধ্যমে নেরুদার কবিতার সঙ্গে বাঙালীর পরিচয় করিয়ে দেন।

পাবলো নেরুদা ‘জনগণের কবি’ রূপেই দীর্ঘদিন সম্মানিত হয়েছেন। কবিতার দ্বারা জনগণের অনুভবকে আন্দোলিত করাই জনকবির কাজ, এই বিশেষ ক্ষমতাই তাঁকে অন্য কবিদের থেকে আলাদা করে। নেরুদার কবিতা কয়লাখনির শ্রমিক থেকে গ্রামের চাষী পর্যন্ত সকলের কাছেই প্রিয় হয়ে উঠেছিল। ‘The Poet Man’ উপন্যাসে স্কারমেতা হুয়ান বলেছেন কীভাবে একটি ডাকপিওনের জীবনে পরিবর্তন এনেছিল নেরুদার কবিতা। মার্কেজও তাঁর ‘Clandestine in Chile’ বইতে এর কিছু উদাহরণ দিয়েছেন। বয়ঃসন্ধির সময় থেকে সত্তর বছর বয়স পর্যন্ত তিনি যে কাব্যসম্ভার নির্মাণ করেছেন বৈচিত্র্যের দিক থেকে তার তুলনা মেলে না।  কবিতার আঙ্গিকের সব রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তিনি উত্তীর্ণ হয়েছেন। তিনি স্বয়ং এক কবিতাশৈলীর জনক, যার মধ্যে আছে অন্য সব শৈলীর নির্যাস। মাটির কাছাকাছি থেকে তাঁর উথ্থান, কম্যুনিষ্ট হয়েও তিনি অসম্ভব ব্যক্তিকেন্দ্রিক। তিনি মানুষের ভূত-ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেকটা প্রফেট-এর মতো ভবিষ্যদ্বাণী করেন। জনৈক সমালোচকের মতে কাঁর কবিতা কেবলই ‘অন্বেষণ’। নেরুদাকে অনেকেই পরাবাস্তবী ও সংরাগ সর্বস্ব কবি রূপে তুলে ধরার চেষ্টা করেন, কিন্তু তাঁর সেই সত্তা হল গৌণ। তিনি একাধারে উত্তর আধুনিক, প্রগতিবাদী, পরাবাস্তববাদী সব – একই নেরুদার মধ্যে যেন নানা নেরুদা। আসলে তিনি জনগণের চেতনার কবি, তথা বিশ্বচেতনার আধুনিক মহাকবি।

সহায়ক গ্রন্থাবলী:

১. Pablo Neruda, A Passion for Life – Adam Feinstein, Bloomsbury, 2004।

২. মহাকবি পাবলো নেরুদা – রবিন পাল, কবিতীর্থ, আশ্বিন ১৪১০ সংখ্যা।

Leave a comment

Check Also

একুশে ফেব্রুয়ারি

আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো : একটি গান ও দুই বাংলার মিলনসেতু – বদরুদ্দোজা হারুন

[ভাষা শহীদ আবুল বরকতের ৯৬ তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে লেখা l]   “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো …

মহাশিল্পী রবিশংকর : ভারতের মোৎসার্ট – রঞ্জন চক্রবর্ত্তী

  বিশ্বের সংগীতপ্রেমীদের কাছে রবিশংকর ও মোৎসার্ট দু’টি নামই সুপরিচিত। উভয়েই বহুশ্রুত হলেও সংগীতের গভীরে …

দু’একটা সত্য কথা – সুদীপ্ত বিশ্বাস

মাত্র ১০০০০ বছর আগে কোনো ধর্মই ছিল না। ছিলনা ধর্ম-ধর্ম করে মানুষের সাথে মানুষের বিভেদ। …

১৯৭৫ থেকে ১৯৮১: মুজিব হত্যা ও সামরিক শাসনে বাংলাদেশ – নির্মাল্য ঘরামী

বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা পায়। সেই সময়ের ঘটনাবলী আমরা সবাই কমবেশী জানি। বিশেষ করে ১৯৭১ …